মঙ্গলবার ব্রহ্মপুত্র নদের দীর্ঘ তীর ঘেঁষে দেখা গেছে শুধু মানুষ আর মানুষ। শত শত নারী পুরুষ ব্রহ্মপ্রত্রে পুণ্য স্নান করেছে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে।
দেশের বিভন্ন স্থানের মতো এখানেও প্রতি বছর চৈত্র মাসের শুক্লা অষ্টমীতে পুণ্যস্নান হয়। এবার করোনাভাইরাস মহামারীতে দেশব্যাপী কঠোর লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার, যার মধ্যে বেশি জসমাগম নিষিদ্ধ।
গত দুদিনে কুড়িগ্রামের পাশের রংপুর, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, বগুড়া, দিনাজপুর, নীলফামারী, ঠাকুরগাঁ, পঞ্চগড় থেকে অটোরিকশা, ইজিবাইক, রিকসা ভ্যান ও মোটরসাইকেলে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা চিলমারীতে আসতে থাকেন।
এসব পুণ্যার্থী স্বাস্থ্যবিধি না মেনে দল বেঁধে ব্রহ্মপূত্র নদের পুটিমারী, কাঁচকোল, রমনা, হাটিথানা, রাজারভিটাসহ বিভিন্ন পয়েন্টে মঙ্গলবার ভোর থেকেই স্নানে যোগ দেন।
উৎসবে অংশ নিতে আসা ভূরুঙ্গামারীর জগদীশ (৫০) ও লালমনিরহাটের দিনেশ (৪৮) জানান, বহু বছর ধরে তাদের বাপদাদারা পাপমোচনের জন্য এখানে পূণ্য স্নান করতে আসতেন। চৈত্র মাসের শুক্ল পক্ষের অষ্টমী তিথিতে এখানে তারা বাবা-মায়ের পিণ্ডদান করে থাকেন।
লালমনিরহাট থেকে আসা নিতাই চন্দ্র (৪০) বলেন, “ব্রহ্মপুত্র নদের জলে মৃত পিতার পিণ্ড দান করার জন্য অনেক কষ্ট করে এসেছি। পুলিশি বাধায় অনেক অসুবিধার মধ্যেও পিণ্ড দান ও স্নান করেছি।”
রাজারহাটের সৌমেন্দ্রনাথ সরকার (৪৮) বলেন, “পিতামাতার কর্ম করার জন্য এখানে আমরা এসেছি। এখানে কিসের লকডাউন, কিসের কি।”
ভুরুঙ্গামারী থেকে আসা মিনতী রানী (২২) বলেন, “যতই লকডাউন হোক না কেন আমাদের ধর্ম তো পালন করতে হবে। বছরে একবার এই সময়টা আসে; উৎসব আমরা তো পালন করবই।”
এই বিষয়ে চিলমারী থানার ওসি অনোয়ারুল ইসলাম বলেন, “আমাদের টহল সব স্থানে আছে; এর মধ্যে যারা এসেছিল তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
চিলমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ ডব্লিউ এম রায়হান শাহ বলেন, “পুণ্যার্থীরা ভোরে বিচ্ছিন্নভাবে স্নানে যোগ দিয়েছেন খবর পেয়ে তাদের ফিরিয়ে দিতে পুলিশকে বলা হয়েছে। এছাড়া ভোর থেকে স্নানের উপর নিষেধ্যাজ্ঞা জারি করে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।”