পঞ্চগড় থেকে ট্রেনে ফের পণ্য পরিবহন শুরু

কঠোর বিধি নিষেধের মধ্যে কৃষকের উৎপাদিত পণ্য পরিবহনে পঞ্চগড় থেকে পার্সেল ট্রেনে পণ্য পরিবহন আবার শুরু হয়েছে।

পঞ্চগড় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 April 2021, 07:09 PM
Updated : 19 April 2021, 07:09 PM

সোমবার দুপুরে পঞ্চগড় বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে পণ্য নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় রেলওয়ের বিশেষ একটি পার্সেল ট্রেন।

গত বছরের মে মাসে করোনায় বিশেষ পরিস্থিতিতে গণপরিবহন বন্ধ থাকার সময় কৃষকের উৎপাদিত পণ্য পরিবহনে পঞ্চগড় থেকে পার্সেল ট্রেন চালু করেছিল রেল মন্ত্রণালয়।

সড়ক পথে পরিবহন চালু হওয়ার পর এতদিন রেলের এই পণ্য পরিবহন বন্ধ ছিল।

রেলওয়ের লালমনিরহাট ডিভিশনের ব্যবস্থাপক শাহ সুফী নূর মোহাম্মদ জানান, বিশেষ এই পার্সেল ট্রেনটিতে চার বগিতে পরিবহন ক্ষমতা রয়েছে ১৬০ মেট্রিক টন। প্রতি সপ্তাহের শনি, সোম ও বুধবার দুপুর ১টায় পঞ্চগড় বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে পার্সেল ট্রেনটি ছেড়ে গিয়ে ঢাকা পৌঁছাবে পরদিন ভোর ৩টায়।

আবার রোববার, মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে ট্রেনটি সকাল ৬টায় ছেড়ে রাত সাড়ে ৮টায় পঞ্চগড়ে পৌঁছবে বলে তিনি জানান।

তিনি জানান, প্রতি কেজি কাঁচা শাক সবজিসহ অন্যান্য পণ্য পরিবহনের জন্য খরচ হবে ১ টাকা ৫৬ পয়সা।

সড়ক পথের চেয়ে কম খরচেই কৃষক ও ব্যবসায়ীরা রেলে পণ্য পরিবাহন করতে পারবেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, “সড়ক পথে ১০ মেট্রিক টন পণ্য পরিবহনে ২৮ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা খরচ হলেও রেলে ১৫ হাজার টাকাতেই সেই পরিমাণ পণ্য পরিবহন করা যাবে।”

প্রথম দিন পঞ্চগড়ের চারজন ব্যবসায়ী শসা, টমেটো, বেগুন ও শুকনো মরিচসহ প্রায় তিন মেট্রিক টন পণ্য পাঠান বলে তিনি জানান।

পণ্য পরিবহনের সার্বিক অবস্থা পরিদর্শনে সোমবার রেলওয়ে স্টেশনে আসেন জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার সাদাত সম্রাট, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফ হোসেন ও রেলওয়ের লালমনিরহাট ডিভিশনের ব্যবস্থাপক শাহ সুফী নূর মোহাম্মদ।

তবে রেলওয়ের পরিবহন খরচ কম হলেও নানা আনুষঙ্গিক খরচ মিলিয়ে মোটামুটি সড়ক পথের মতো প্রায় সমান খরচ পড়ে বলে কোনো কোনো ব্যবসায়ীর ভাষ্য।

সবজি ব্যবসায়ী রশিদুল ইসলাম বলেন, রেলে খরচ কম; কিন্তু বার বার উঠানামা করতে হয়। প্রথমে রেলস্টেশন পর্যন্ত নিয়ে যেতে হয় আলাদা গাড়িতে। ঢাকায় কমলাপুর স্টেশনে পণ্য নামিয়ে আবার অন্য গাড়িতে গন্তব্যে নিয়ে যেতে হয়। এভাবে খরচ সড়ক পথের মতোই হয়ে যায়।

“সেই সাথে বাড়তি ঝামেলা হয়। তাই ব্যবসায়ীরা রেলে পণ্য পরিবহনে তেমন আগ্রহী হয় না।”

জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, পঞ্চগড়ের কৃষক ও ব্যবসায়ীরা যেন সহজেই এই কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে দেশের এ প্রান্ত থেকে ঢাকায় সহজেই পণ্য পাঠাতে পারেন সেজন্য মাননীয় রেলপথ মন্ত্রী পঞ্চগড় থেকে আবারো পার্সেল ট্রেনে পণ্য পরিবহনের উদ্যোগ নিয়েছেন।

“এখন সড়ক পথের চেয়ে অর্ধেক খরচে তারা রেলে পণ্য পরিবহন করতে পারছেন। আমরা চাই রেল মন্ত্রণালয় এ এলাকার মানুষের জন্য যে সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে আমাদের কৃষক ও ব্যবসায়ীরা সেসব সুযোগ কাজে লাগাক।”