ড্রামে তরুণীর লাশ: পুলিশ কনস্টেবল গ্রেপ্তার

রাজশাহীতে ড্রামের সেই লাশের পরিচয় মিলেছে; যাকে এক কনস্টেবল হত্যা করেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

রাজশাহী প্রতিনিধবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 April 2021, 05:14 AM
Updated : 19 April 2021, 05:35 AM

নিহত তরুণী নার্স ছিলেন। বিয়ের কথা বলে ধর্ষণের পর তাকে হত্যা করা হয় বলে পুলিশের ভাষ্য। এর আগে ওই কনস্টেবল এক কলেজছাত্রীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে নগ্ন ভিডিও তৈরি করে বরখাস্ত হয়েছিলেন।

রাজশাহী পিবিআই পুলিশের অতিরিক্ত সুপার আবুল কালাম আজাদ জানান, নিমাইচন্দ্র সরকার (৪৩) নামে পুলিশের এক কনস্টেবলসহ চারজনকে গ্রেপ্তারের পর তারা বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।

রাজশাহী সিটি বাইপাস গরুর হাটের কাছ থেকে শুক্রবার অজ্ঞাতপরিচয় এক তরুণীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। চারজনকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ তার পরিচয় পেয়েছে।

নিহত তরুণীর নাম ননিকা রানী রায় (২৪)। তার বাড়ি ঠাকুরগাঁ সদর উপজেলার মিলনপুর। তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নার্সিং ইনস্টিটিউট থেকে গত বছর পাস করে রাজশাহীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে কাজ করছিলেন। নগরের পাঠানপাড়া এলাকার একটি মেসে থাকতেন ননিকা।

পুলিশ কর্মকর্তা আজাদ বলেন, সিসিটিভির ফুটেজসহ তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে তারা প্রথমে নিমাইকে শনাক্ত করেন। নিমাই রাজশাহী জিআরপি থানায় দায়িত্বে রযেছেন। তার বাড়ি পাবনার আতইকুলা উপজেলার চরাডাঙ্গা গ্রামে।

জিজ্ঞাসাবাদের তথ্য দিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা আজাদ বলেন, “রাজশাহীর তেরখাদিয়া এলাকার একটি ভাড়া বাড়িতে নিয়ে তরুণীকে হত্যা করেন নিমাই। গত ৬ এপ্রিল নিমাই বাড়িটি ভাড়া নেন। সেখানে নিমাই একাই থাকতেন। তার স্ত্রীও পুলিশের কনস্টেবল। তিনি বগুড়ায় কর্মরত।

“নিমাই হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। তার দেওয়া তথ্যমতে ছয়-সাত বছর ধরে ননিকার সঙ্গে নিমাইয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। নিমাই তাকে বিয়ের কথা বলে ধর্ষণ করেন। সম্প্রতি ননিকা বিয়ের জন্য চাপ দেন। এ কারণে তাকে বাসায় নিয়ে হত্যার পর লাশ ড্রামে ভরা হয়। এরপর একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে ডোবায় ফেলে দেওয়া হয়।”

পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নিমাইচন্দ্র সাত বছর ধরে রাজশাহী জিআরপি থানায় কর্মরত। এর আগে তিনি মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখায় চাকরি করার সময় এক কলেজছাত্রীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে নগ্ন ভিডিও তৈরি করেন। ভিডিওটি মানুষের হাতে হাতে চলে যায়। তাকে বরখাস্ত হয়। পরে নিমাই চাকরি ফিরে পেয়ে রেল পুলিশে যোগ দেন।

গ্রেপ্তারকৃত অন্য তিনজন হলেন- নিমাইয়ের সহযোগী রাজশাহীর কাশিয়াডাঙ্গা থানার আদারীপাড়ার কবির আহম্মেদ (৩০), রাজপাড়া থানার শ্রীরামপুর এলাকার সুমন আলী (৩৪) ও রাজশাহী শহরের বিলশিমলা এলাকার মাইক্রোবাস চালক আব্দুর রহমান (২৫)।