বগুড়ায় শিশু সিয়াম হত্যা: নানি গ্রেপ্তার

বগুড়ার শাহাজাহানপুরে শিশু সিয়ামকে হত্যার অভিযোগে এক নারী গ্রেপ্তার হয়েছেন; যাকে সিয়ামের দূর সম্পর্কের নানি বলছে পুলিশ।

বগুড়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 April 2021, 05:41 PM
Updated : 13 April 2021, 05:41 PM

মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় জেলার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুঞা নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান।

গ্রেপ্তার মালতি বেগম (৫২) শাহাজাহানপুর উপজেলার পলিপালাশ গ্রামের মুসলিম উদ্দিনের স্ত্রী। 

মঙ্গলবার দুপুরে শাহাজাহানপুর উপজেলার গোহাইল ইউনিয়নের পানিহালী গ্রামের মাঠ থেকে পুলিশ সিয়ামের (৮) মরদেহ উদ্ধার করে। সিয়াম পার্শ্ববর্তী নন্দীগ্রাম উপজেলার ভাটগ্রাম ইউনিয়নের তেঁতুলগাড়ি গ্রামের মৃত নজরুল ইসলামের ছেলে।

পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুঞা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সম্পর্কে মালতি বেগম নিহত সিয়ামের দূর সম্পর্কের নানি। কিন্তু এতদিন তাদের পরিচয় ছিল না। দুই সপ্তাহ আগে সারিয়াকান্দি উপজেলায় সিয়ামের খালার বাড়িতে তার মা সাবিনা মালতির পরিচয় পান। এরপর তারা একসঙ্গে তেঁতুলগাড়িতে সিয়ামদের বাড়ি যান। 

এসপি আশরাফ বলেন, সেখানে সাবিনার ভাই মমিনের জমজ বাচ্চাদের দত্তক নিতে চান মালতি। কিন্তু মমিন তাতে রাজি না হলে তাদের মাঝে মনোমালিন্য হয়৷

“এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সাবিনার ছেলে সিয়ামের ক্ষতি করার পরিকল্পা করে বলে মালতি জানান।” 

জিজ্ঞাসাবাদে মালতির বরাতে এসপি বলেন, মঙ্গলবার সকাল আনুমানিক সাড়ে ৮টায় সিয়ামকে খাবারের প্রলোভন দিয়ে মালতি বাড়ি থেকে নিয়ে যান। রাস্তায় নিহতের মা ও মামি তাদের দেখলেও তাদের কোনো সন্দেহ হয়নি।

“এক পর্যায়ে মালতি একটি দোকান থেকে খাবার কিনে দিয়ে তেঁতুলগাড়ি গ্রাম থেকে দুই কিলোমিটার উত্তরে শাহাজাহানপুরের পানিহালী এলাকায় একটি ধান ক্ষেতে নিয়ে সিয়ামকে হাসুয়া দিয়ে জবাই করে।” 

পরে নিহতের দেহ পাশের একটি ড্রেনে ফেলে দেন এবং হাসুয়া ধান ক্ষেতে রেখে পালিয়ে যান, বলেন এসপি। 

পুলিশ সুপার আরও বলেন, তাদের মনে হয়েছে, মালতি বাচ্চা দত্তক নেওয়ার কাজ করতেন। সাবিনার ভাইয়ের বাচ্চাদের দত্তক না পেয়ে তিনি হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়েছেন। 

ঘটনার পরে পুরো এলাকায় মাইকিং হলে সাবিনা ও তার ভায়ের স্ত্রী ছাড়াও আরও দুজন সাক্ষী পাওয়া যায় যারা মালতির সঙ্গে সিয়ামকে ধানক্ষেতে যেতে দেখেছেন, বলেন এসপি। 

“পরে মালতির বাড়ি গিয়ে রক্তমাখা বোরকা ধোয়া অবস্থায় পাই, এবং আমরা তাকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করি। পরে তিনি প্রাথমিকভাবে সবকিছু স্বীকার করেছেন।” 

সংবাদ সম্মেলনে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আলী হায়দার চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আব্দুর রশিদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) মোতাহার হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল ও মিডিয়া মুখপাত্র) ফয়সাল মাহমুদসহ শাহাজাহানপুর থানার ওসি আব্দুল্লা আল মামুন  ও ডিবির ওসি আব্দুর রাজ্জাক উপস্থিত ছিলেন।