পাহাড়ি জলে ভাসল বর্ষবরণের ফুল

পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের পাহাড়িদের প্রধান সামাজিক ও ধর্মীয় উৎসব শুরু হয়েছে।

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 April 2021, 01:41 PM
Updated : 12 April 2021, 01:41 PM

সোমবার ভোরে চেঙ্গী নদীসহ বিভিন্ন প্রবাহমান ছড়া-খালে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে চাকমাদের ‘ফুল বিজু’ উদযাপিত হয়েছে।

চাকমা জনগোষ্ঠীর শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণীসহ বিভিন্ন বয়সীরা খাগড়াছড়ির চেঙ্গী নদীসহ বিভিন্ন ছড়া-খালে ফুল দিয়ে উপগুপ্ত বুদ্ধের উদ্দেশ্যে পুজা করেন। অনেকে নদীতে ফুল ভাসিয়ে দেন।

ফুল ভাসাতে আসা কিশোরী চম্পা চাকমা বলেন, “আমাদের এবার ফুল বিজুর প্রধান প্রার্থণা ছিল করোনাভাইরাস থেকে মুক্তিলাভ করা।

এছাড়াও পুরোনো বছরের দুঃখ-গ্লানি ভুলে নতুন বছরে ভালো কিছু প্রত্যাশা করছি বলেন চম্পা।

সমাজকর্মী নিপু চাকমা বলেন, মহামারীর কারণে গেল বছর ফুল বিজুও করতে পারিনি। এবার অন্তত সীমিতভাবে নদীতে ফুল ভাসাতে পেরে খুশি লাগছে।

চৈত্রের শেষ দুই দিন ও বাংলা নবর্ষের প্রথম দিন ‘বিজু’ উৎসব পালন করেন চাকমারা। সোমবার ফুল ‘বিজু’, মঙ্গলবার ‘মূল বিজু’ এবং নববর্ষের দিন ‘গয্যাপয্যা’।

অন্যদিকে, ত্রিপুরা জনগোষ্ঠী চৈত্র সংক্রান্তির দিনে ‘হারি বৈসু’, পহেলা বৈশাখ ‘বৈসুমা’ এবং নববর্ষের দ্বিতীয় দিন ‘বিসিকাতাল’ নামে বর্ষবরণ ও বর্ষ বিদায় উৎসব করে।

আর মারমা জনগোষ্ঠী  বাংলা নববর্ষের দিন থেকে তিন দিন ধরে সাংগ্রাই উৎসব উদযাপন করে থাকে।

তবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে গত বছরের মতো এ বছরও ত্রিপুরাদের ঐতিহ্যবাহী ‘গরয়া’ নৃত্য এবং মারমাদের জলকেলি বা ‘পানি ছিটানো উৎসব’ হচ্ছে না।

ত্রিপুরাদের বৈসুমা, মারমাদের সাংগ্রাই এবং চাকমাদের ‘বিজু’ উৎসবের আদ্য অংশ মিলিয়ে একসাতে ‘বৈসাবি’ উৎসব নাম দেওয়া হয়েছে।

এবারে ফুল বিজু উপলক্ষে খবংপুড়িয়া এলাকায় সবার সাথে চেঙ্গী নদীতে ফুল ভাসিয়েছেন খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মংসুইপ্রু চৌধুরী অপু।

এ সময় পাহাড়িদের সার্বজনীন ‘বৈসাবি’ উৎসবের শুভেচ্ছা জানান।

মহামারীর কারণে এবারও বৈসাবি উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা না থাকলেও ফুল বিজুতে ফুল ভাসাতে আসা লোকজনের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি পালনের তেমন বালাই ছিল না।

তবে রীতি অনুযায়ী বৈসাবিকে ঘিরে তেমন উৎসবের আমেজ নেই। ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলার আয়োজনও হচ্ছে না।