কোভিড-১৯: ভোলায় পরিত্যক্ত হাত ধোয়ার বেসিন

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে ভোলায় বিভিন্ন স্থানে হাত ধোয়ার জন্য নির্মিত কয়েক ডজন ‘বেসিন’ অবহেলায় এখন পরিত্যক্ত রয়েছে।

ভোলা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 April 2021, 03:59 AM
Updated : 12 April 2021, 03:59 AM

জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর নির্মিত এসব হাত দোয়ার বেসিন নোংরা, আবর্জনার স্তূপ, ধুলো-বালিতে মাখামাখি হয়ে ব্যবহার অযোগ্য অবস্থায় পড়ে আছে।

মাঝখানে কয়েক মাস করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিম্নমুখী হওয়ায় এসব বেসিন ব্যবহারে কেউ গুরুত্ব দেয়নি।

করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার রেকর্ড অতিক্রম করলেও এসব বেসিন পরিষ্কার কিংবা ব্যবহার উপযোগী করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

সরেজমিনে দেখা যায়, জেলা শহরের যোগীরঘোল চত্বর, সদর উপজেলা চত্বর, সাব রেজিস্ট্রার অফিস, ভোলা সরকারি স্কুল মাঠ, ভোলা সদর হাসপাতাল, মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র, ভোলা পৌর ভবনের সামনে, পরাণগঞ্জ বাজার মসজিদ সংলগ্নসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ লোক সমাগম স্থানে ১৬টি বেসিন নির্মাণ করেছে ভোলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।

এছাড়া ভোলা শহরের বাইরে প্রতি উপজেলায় দুইটি করে জেলায় ২৮টি বেসিন নির্মাণ করা হয় বলে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর জানায়।

স্থনীয়রা জানান, নির্মাণের কিছুদিন এগুলো সচল থাকলেও এখন বেসিনগুলো অকেজো হয়ে পড়েছে, যার ফলে পথচারীরা এগুলো ব্যবহার করতে পারছে না। সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যায় করে নির্মিত বেসিনগুলো দ্রুত সংস্কার করে জনসাধারণের ব্যবহার উপযোগী করার দাবি করছেন তারা।

ভোলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান ইলিয়াছ এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী মো. ইলিয়াছ বলেন, জেলায় জরুরি ভিত্তিতে ২৮টি বেসিনের মধ্যে তার প্রতিষ্ঠান ২২টি বেসিন ২৯০০০ টাকা বয়ে নির্মাণ করেন। বর্তমানে বেসিনগুলি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।

ইলিয়াছ বলেন, “জরুরি ভিত্তিতে বেসিনগুলি নির্মাণ করে আমরা ভোলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কাছে হস্থান্তর করি। এগুলো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব ভোলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের।”

যোগীরঘোল বাজার ব্যবসায়ী ইজমাউল হক বলেন, “গত বছর করোনাকালীন সময় তাড়াহুড়ো করে বেসিনগুলি নির্মাণ করে কেউ এটার দেখভাল করেনি। কিছুদিন চলার পর হঠাৎ অচল হয়ে যায়। সাবান, পানি কোনো কিছুরই ব্যবস্থা ছিল না।”

ভোলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী ফিরোজ আলম বলেন, “আমরা ইউনিসেফ থেকে যে পরিমাণ সাবান পেয়েছি তা সব বেসিনেই দিয়েছি। কিন্তু পরের দিন আর সাবান পাওয়া যায়নি।”

বেসিনগুলোর পরিচর্যার ব্যাপারে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।

ভোলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মাহমুদ খান বলেন, গত বছর জরুরি ভিত্তিতে ২৮টি বেসিন নির্মাণ করা হয়। করোনা পরবর্তী সময় এগুলো আর পরিচর্যা করা হয়নি।

“নির্মাণের সময় যে স্থানে বেসিনগুলো নির্মাণ করা হয়েছে সেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় পানি সরবরাহ করবে বলে তারা প্রস্তাব রেখেছিল। কিন্তু কেউ প্রতিশ্রুতি রাখেনি।”  

যেহেতু আবার কভিড-১৯ দ্বিতীয় ধাপ শুরু হয়েছে তাই বেসিনগুলি পুনরায় ব্যবহার উপযোগী করার প্রয়োজনীয়তা মনে করে সকল উপজেলায় চিঠি দেবেন বলে তিনি জানান।

প্রয়োজনীয় পানির জন্য পুনরায় সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করবেন জানিয়ে তিনি বলেন, এগুলোর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একজন মনিটরিং অফিসারকে দায়িত্ব দেওয়া হবে।