কিশোরগঞ্জে গরম বাতাসে ধানে চিটা, বিপাকে কৃষক

কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলে গরম ঝড়ো বাতাসে ২৫ হাজার হেক্টর বোরো ধান চিটা হয়ে গেছে বলে কৃষি কমৃকর্তা জানিয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন কৃষকেরা।

করিমগঞ্জ উপজেলার সুতারপাড়া ইউনিয়নে কর্মরত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. তাজউদ্দিন জানান, চলতি এপ্রিল মাসের ৪ তারিখ সন্ধ্যার পর এ এলাকায় টানা সাড়ে তিন ঘণ্টা ঝড়ো গরম হাওয়া বয়ে যায়। এ সময় তাপমাত্রা ছিল ৩৪ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেডের উপরে। এতে ‘হিট ইনজুরিতে’ আক্রান্ত হয়ে আনুমানিক ২৫ হাজার হেক্টর জমির বোরো ধানের প্রস্ফুটিত শীষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে চিটা হয়ে গেছে।”

তিনি বলেন, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বছরের প্রায় ছয় মাস হাওর এলাকা নিমজ্জিত থাকে। শুধুমাত্র বোরো ধানের চাষ করে পুরো বছরের অন্ন-বস্ত্রসহ যাবতীয় ব্যয় চালান এ এলাকার কৃষকেরা। কিন্তু ফসলের ক্ষতি হওয়ায় এখন শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন তারা।

‘হিট শকে’ ধান চিটা: কেন হয়, প্রতিকার কী

করিমগঞ্জের হাওর এলাকার চং নোয়াগাও গ্রামের কৃষক আতা ইলাহি বলেন, “ধার ও ঋণ করে আমরা বোরো চাষ করি; এ বছল ফসল ভালো হবে বলে আশাবাদী ছিলাম। কিন্তু মুহুর্তের মধ্যে সব ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এখন আমি পরিবার নিয়ে খাব কি বা ঋণই বা শোধ করব কিভাবে।” কৃষক আব্দুর রশীদ বলেন, “আমাদের একটাই ফসল। কিন্তু গরম বাতাসের কারণে আমাদের অর্ধেক ফসলও উঠাতে পারব কিনা জানিনা। এখন আমরা কিভাবে জীবন বাঁচাব।”

কৃষক দিদার মিয়া বলেন, “আমাদের বেশিরভাগ ধান চিটা হয়ে গেছে। এখণ সরকার যদি আমাদের জন্য সহায়তা না করে, তাহলে আমরা কিভাবে চলব ?”     

এ বিষয়ে করিমগঞ্জের সুতারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হারুন অর রশীদ বলেন, “সরকার যদি এ এলাকার কৃষকদের সহায়তায় ভিজিএফসহ অন্যান্য কার্যক্রম গ্রহণ করে তবেই তাদের একটা উপায় হবে। না হলে তারা কোথায় যাবে, কিভাবেই বা বেঁচে থাকবে।”

চলতি মৌসুমে কিশোরগঞ্জে ১ লাখ ৬৬ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে বলে জানান জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. ছাইফুল আলম।

তিনি বলেন, “ফসল নষ্ট হ্ওয়ার খবর পেয়ে ইতোমধ্যে ঢাকা থেকে কৃষি বিভাগের ঊর্ধতন কর্মকর্তারা ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করে গেছেন। তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী ক্ষয়-ক্ষতি নিরুপণসহ ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। পরবর্তীতে সে তালিকার ভিত্তিতে কৃষকদের ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। “