পাকা মরিচে লালে লাল সারিয়াকান্দির চরাঞ্চল

বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলায় যমুনার চরাঞ্চল এখন পাকা মরিচের রঙে লালে লাল। মরিচ তোলায় ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা।

জিয়া শাহীন বগুড়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 April 2021, 07:02 AM
Updated : 8 April 2021, 07:29 AM

সম্প্রতি উপজেলার বোহাইল, চন্দনবাইশা, কাকামালপুরসহ বিভিন্ন চরে গিয়ে দেখা গেছে, কোথাও সবুজক্ষেতে লাল মারিচের সমাহার, কোথাও বা পাকা মরিচ শুকানো হচ্ছে রোদে। মরিচ তোলা, বাছাই, শুকানো নিয়ে ব্যাস্ত সময় পার করছেন কৃষাণ-কৃষাণীরা।

আবার কেউবা শুকনো মরিচ বিক্রি করতে চরের বালিপথে হেঁটে যাচ্ছেন হাটে, কেউবা ঘোড়ার গাড়িতে করে নিয়ে যাচ্ছেন।

বোহাইল চরের মাসুদ মিয়া বলেন, তিনি নয় বিঘা জমিতে মরিচ চাষ করেছেন। বিঘাপ্রতি ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা খরচ হয় হাটে নেওয়া পর্যন্ত। প্রতি বিঘায় আট থেকে নয় মণ শুকনো মরিচ হয়। তিনি এ বছর আট হাজার টাকায় এক মণ বিক্রি করেছেন।

চরের বোহাইল হাটে মরিচ বিক্রি করেন তারা।

হাটের পাইকার আজাদুল জানান, চরের জমির মরিচের গুণ-মান ভাল। বিভিন্ন মশলা উৎপাদনকারী কোম্পানির কাছে এর চাহিদা বেশি। তিনি এই হাট থেকে শুকনো মরিচ কিনে বিভিন্ন কোম্পানির কাছে বিক্রি করেন।

তিনি বলেন, “বেশি ভাল হলে নয় হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয় প্রতিমণ মরিচ। সর্বনিম্ন দাম ছয় হাজার টাকা। সবচেয়ে কম দাম একেবারে নিম্নমানের মরিচের। এর রং সাদা ধরনের। গ্রাম্য ভাষায় একে বলে খুষ্টা মরিচ। এর চাহিদাও কম নয়।”

মরিচ ঘিরে চরের শ্রমের বাজারও এখন চাঙা।

বোহাইল চরের কদভানু বিবি ও হাসি খাতুন বলেন, জমি থেকে প্রতি বস্তা মরিচ তুলে ১০০ টাকা পান তারা। দিনে চার-পাঁচ বস্তা মরিচ তুলতে পারেন।

এসব মরিচ ভাল, মাঝারি ও নিম্নমান—এমন তিনটি ভাগ করা হয়। তারপর রোদে শুকাতে দেওয়া হয়। এসব কাজে দিনে ৪০০ টাকা করে পান শ্রমিকরা।

সারিয়াকান্দিতে এবার শত কোটি টাকার মরিচ উৎপাদন হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল হামিদ।

তিনি বলেন, উপজেলার চরাঞ্চলে এ বছর ২৮ হাজার ৩০ বিঘা জমিতে মরিচ চাষ হয়েছে।  প্রতিবিঘায়  গড়ে আট মণ শুকনা মরিচ উৎপাদন হয়েছে। সেই হিসাবে প্রায় দুই লাখ ২৫ হাজার মণ। দেশের মধ্যে চরের মরিচ গুণগত মানে সেরা। তাই এর চাহিদা বেশি। বিভিন্ন মশলা প্রস্তুত কোম্পানি চরের মরিচ বেশি পছন্দ করে। কাঁচা ও পাকা মিলে প্রায় শত কোটি টাকার মরিচ উৎপাদন হয়েছে এবার এ উপজেলায়।