ফরিদপুরে আগুন-হামলা পরিকল্পিত: ইউএনও

ফরিদপুরে লক ডাউন বাস্তবায়ন করতে যাওয়া প্রশাসনের লোকজনের সঙ্গে ‘বাগবিতণ্ডার জেরে’ আগুন-হামলার ঘটনা পরিকল্পিত বলে প্রশাসন ও পুলিশে ভাষ্য।

ফরিদপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 April 2021, 09:42 AM
Updated : 6 April 2021, 09:42 AM

সালথার ইউএনও হাসিব সরকার বলেন, “গুজব ছড়িয়ে পরিকল্পিতভাবে এই হামলা চালানো হয়েছে।”

সোমবার রাত ৮ টা থেকে ১১টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টা ধরে উপজেলা কমপ্লেক্স, উপজেলার সহকারী কমিশনারের (ভূমি) দপ্তর তছনছ করার পাশাপাশি আগুন দেয় ‘হাজারো’ মানুষ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য যোগ দেন। তারা সাত শতাধিক গোলাগুলি নিক্ষেপ করেন।

এ ঘটনায় জুবায়ের হোসেন (২০) নামে এক তরুণ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।

ঘটনার পর পুলিশ তিনজনকে আটক করলেও এখনও মামলা হয়নি।

ইউএনও বলেন, “করোনাভাইরাস সংক্রমণ বাড়তে থাকায় সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সোমবার বিকালে রামকান্তপুর এলাকায় লক ডাউন বাস্তবায়ন করতে যাই। সেখানে মানুষের জটলা সৃষ্টি হয়। এ অবস্থায় আমি ফিরে আসি। সেখানে পুলিশের একটি দল পাঠানো হয়। পরে স্থানীয়দের সঙ্গে পুলিশের বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে পুলিশের এসআই মিজানুর রহমানের ওপর হামলা চালায় স্থানীয়রা। হামলায় মিজানুর রহমানের মাথা ফেটে যায়।

“পুলিশ চলে আসার পর স্থানীয় একটি চক্র গুজব রটায় যে, পুলিশের গুলিতে স্থানীয় কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে এবং বাহিরদিয়া মাদ্রাসার দুই মওলানাকে গ্রেপ্তারের পর মারধর করা হচ্ছে। এর জেরে রাত ৮ টা থেকে ১১টা পর্যন্ত কয়েক হাজার মানুষ উপজেলা চত্বরে লাঠিসোটা নিয়ে প্রবেশ করে বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। ইউএনওর গাড়ি, সহকারী কমিশনারের (ভূমি) গাড়ি ও তিনটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয় তারা।”

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সালথা থানা পুলিশের পাশাপাশি ফরিদপুর, বোয়ালমারি, ভাঙ্গা ও নগরকান্দার পুলিশসহ র‌্যাব ও আনসার সদস্যরা যোগ দেন।

জেলার পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান বলেন, “মিথ্যা গুজবেই মধ্যযুগীয় কায়দায় হামলা চালানো হয়। রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষায় ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সালথা থানা পুলিশের পাশাপাশি আশপাশের থানা থেকে পুলিশ সদস্যসহ র‌্যাব ও আনসার সদস্যরা এসে ৫৮৮ রাউন্ড শর্ট গানের গুলি, ৩২ রাউন্ড গ্যাস বুলেট, ২২টি সাউন্ড গ্রেনেড ও ৭৫ রাউন্ড রাইফেলের গুলি ছোড়ে। আইশৃঙ্খলা বাহিনীর আট সদস্যসহ আহত হন কমপক্ষে ২০ জন।”
তিনি বলেন, ভিডিও ফুটেজ দেখে হামলাকারীদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। পুলিশ তিনজনকে আটক করেছে। আর মামলার প্রস্তুতি চলছৈ।

বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও পুরো এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ঘটনাস্থল ও আশপাশের এলাকায় পুলিশ ও র‌্যাব মোতায়েন করা হয়েছে।