ব্রাহ্মণবাড়িয়া তাণ্ডব: হেফাজতের সাথে প্রশাসনকেও দুষলেন এমপি মোকতাদির

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতে ইসলামের তাণ্ডবে প্রশাসন ও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 March 2021, 01:48 PM
Updated : 29 March 2021, 02:17 PM

সোমবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তাণ্ডবের ‘বিচার বিভাগীয় তদন্ত’ দাবি করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর-৩ আসনের এ সংসদ সদস্য বলেন, কারা হামলা করল, কেন হামলা করল, আইনশৃংখলা বাহিনী ও জেলা প্রশাসন কেন ‘নীরব ভূমিকা’ পালন করল, কেন সদর থানা থেকে ‘অদ্ভুত মাইকিং’ করা হল- তার ব্যাখ্যা প্রয়োজন।

প্রশাসনের যেসব বিভাগ ‘বারবার তাগাদা’ দেওয়ার পরও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ায়নি, তাদের বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোকতাদির চৌধুরী।

২০১৬ সালের ১২ জানুয়ারি নাসিরনগরে সাম্প্রায়িক হামলার পরও যে বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছিলেন, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে ক্ষমতাসীন দলের এই এমপি বলেন, “যদি সঠিক বিভাগীয় তদন্ত হত, তাহলে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসত। আজকের এই জঘন্য ঘটনা ঘটত না।”

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আগমনের প্রতিবাদ করে আসছিল হেফাজতে ইসলাম ও কয়েকটি বামপন্থি দল। সেই আন্দোলনে শুক্রবার স্বাধীনতা দিবসে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সংঘাত ও প্রাণহানি ঘটে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গত তিন দিন হেফাজতে ইসলামের কর্মীরা ব্যাপক তাণ্ডব চালায়। দফায় দফায় সংঘর্ষে অন্তত সাতজনের মৃত্যু হয়।

সংবাদ সম্মেলনে ২৬ মার্চ দুপুর ৩টা পর থেকে এ জেলায় হেফাজত ইসলামের কর্মীদের ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের বিবরণ তুলে ধরেন উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।

সেদিন রেলস্টেশন যারা ভাংচুর করেছে, তারা অধিকাংশই ‘কম বয়সী’ জানিয়ে তিনি বলেন, “তাদেরকে ইসলাম কায়েমের প্রলোভন দেখিয়ে কেউ না কেউ এই কাজ করিয়েছে। প্রলোভনদাতাদের আমরা চিহ্নিত করতে চাই।”

বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালসহ বঙ্গবন্ধু স্কয়ার, ডিসি ও এসপির বাংলো, এসপি অফিস, সিভিল সার্জন অফিস, মৎস্য অফিসসহ বেশ কিছু কার্যালয় এবং এসব অফিসের সামনের ফুল বাগান ধ্বংস করার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “দানব ছাড়া কেউ ফুলের বাগান ধ্বংস করতে পারে না।”

রোববার হরতালের সময় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুনের বাসা ও কার্যালয়, মেয়র নায়ার কবিরের বাসভবন, ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বাসায় আক্রমণের নিন্দা জানান সাংসদ।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এ পর্যন্ত ঘটা সব ঘটনার বিভাগীয় তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

অন্যদের মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার, সহ-সভাপতি তাজ মোহাম্মদ ইয়াসিন, যুগ্ম-সম্পাদক মাহবুবুল বারি চৌধুরী মন্টু এ সময় উপস্থিত ছিলেন।