কুড়িগ্রামে ভারসাম্যহীন নারীর সন্তান, পিতৃত্বের খোঁজে পুলিশ

কুড়িগ্রামে মানসিক ভারসাম্যহীন এক নারীর সন্তানের পিতৃত্বের খোঁজে নেমেছে পুলিশ, যদিও জন্মের অল্প সময় পরই শিশুটি মারা গেছে।

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 March 2021, 03:01 PM
Updated : 28 March 2021, 03:01 PM

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, শনিবার ভোরে শহরে একটি খোলা জায়গায় এক মানসিক ভারসাম্যহীন নারীর ছেলের জন্ম হয়। পুলিশ নবজাতক ও মাকে উদ্ধার করে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে মা সুস্থ হলেও শিশুটি মারা যায়।

মানসিক ভারসাম্যহীন এই নারীর সঙ্গে এমন আচরণের জন্য দায়ী ব্যক্তিকে ধরার জন্য পুলিশ মৃত নবজাতকের ডিএনএ পরীক্ষার উদ্যোগ নিয়েছে।

কুড়িগ্রাম সদর থানার ওসি খান মো. শাহরিয়ার বলেন, শনিবার শহরের খলিলগঞ্জে বিএডিসি গোডাউন সংলগ্ন জয়বাংলা মোড়ে মানসিক ভারসাম্যহীন এক নারীর ছেলে হয়। স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে ভোরে ওই নারী ও শিশুটিকে উদ্ধার করে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ।

“ভবঘুরে ওই নারী চিকিৎসা পেয়ে সুস্থ হয়ে উঠলেও ওইদিন রাত ৯টার দিকে মারা যায় শিশুটি।”

ওসি বলেন, শিশুটির মৃত্যুতে পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় কুড়িগ্রাম সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়রি নথিভক্ত করা হয়। পরে শিশুটির ডিএনএ পরীক্ষার একটি আবেদন কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।

হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. ছাদেকুর রহমান সেটি গ্রহণ করেন বলে ওসি জানান।

এই বিষয়ে কুড়িগ্রাম দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি একেএম সামিউল হক নান্টু বলেন, কুড়িগ্রামে প্রায়ই ভবঘুরে ও মানসিক ভারসাম্যহীন নারীদের সঙ্গে এমন অপরাধ হচ্ছে; ঘটছে অনাকাঙ্ক্ষিত প্রেগনেন্সির ঘটনা। কিন্তু এর দায় কেউ নিতে চায় না। বিকৃত রুচির কিছু মানুষ বারবার এ ঘটনা ঘটিয়েও পার পেয়ে যাচ্ছে।

পুলিশ ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে অপরাধীদের মুখোশ উন্মোচন করতে পারলে এই ধরনের অপরাধ কমে যাবে বলে তিনি মনে করেন।

কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. নবিউর রহমান বলেন, শিশুটি ‘ইমম্যাচিউরড’ ছিল। রাতেই মারা যায়। এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম সদর থানা থেকে একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে এবং নমুনার জন্য ডিএনএ টেস্টের আবেদন করা হয়েছে। নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে পরবর্তীতে পিতৃত্ব পরিচয় শনাক্তে কাজে লাগবে।

কুড়িগ্রাম পুলিশ সুপার সৈয়দা জান্নাত আরা বলেন, “এটি একটি অমানবিক কাজ। একজন মানসিক ভারসাম্যহীন নারী প্রেগন্যান্ট হয়েছে। আমরা এই জঘন্য অপরাধের সাথে যে বা যারা জড়িত তাকে শনাক্তে ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে নমুনা সংগ্রহ পূর্বক অপরাধীকে ধরতে কাজে লাগাব, যাতে ভবঘুরে নারীটি সুবিচার পান।”