ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মাদ্রাসাছাত্রদের তাণ্ডব, রেল স্টেশনে অগ্নিসংযোগ

নরেন্দ্র মোদীর আগমনকে ঘিরে চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে পুলিশ ও মাদ্রাসাছাত্রদের সংঘর্ষের পর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একদল মাদ্রাসাছাত্র শহরে ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 March 2021, 03:47 PM
Updated : 26 March 2021, 04:03 PM

আখাউড়া রেলওয়ে থানা পুলিশের ওসি মাজহারুল করিম জানান, শুক্রবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এই তাণ্ডব চলাকালে তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুর চালিয়েছে।

এ কারণে বিকাল থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে বলে জানান তিনি।

সন্ধ্যায় শহর ও আশপাশ এলাকায় বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকালে বিক্ষুব্ধ মাদ্রাসা ছাত্ররা জেলা শহরের কাউতলি এলাকায় পুলিশ সুপারের কার্যালয় এবং ২ নম্বর পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা করে। তারা জেলা শহরের বঙ্গবন্ধু স্কয়ার, আব্দুল কুদ্দুস মাখন মুক্তমঞ্চ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা, পৌর মার্কেট, ইন্ডাস্ট্রিয়াল স্কুল, ফায়ার সার্ভিস স্টেশন এলাকায় টানানো ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টার ছিঁড়ে অগ্নিসংযোগ করেন। তারা বিভিন্ন আরও বিভিন্ন স্থাপনায় ভাঙচুর চালায়।  

ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. শোয়েব আহমেদ বলেন, “বিকালে কয়েকশ মাদ্রাসাছাত্র স্টেশনে এসে হামলা চালায়। এ সময় তারা প্যানেল টিকিট কাউন্টার, প্যানেল বোর্ড ও যাত্রীদের চেয়ার ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এতে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।”
আখাউড়া রেলওয়ে থানার ওসি মাজহারুল করিম বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় বিকাল ৪টা থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এর ফলে সিলেট থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী আন্তঃনগর জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ট্রেনটি আজমপুর রেলওয়ে স্টেশন ও চট্টগ্রাম থেকে আসা ঢাকাগামী মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেনটি আখাউড়া রেলওয়ে স্টেশনে আটকা পড়ে আছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেল স্টেশনে জিআরপি পুলিশ ফাঁড়িতেও হামলা হয় বলে তিনি জানান।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মো. আনিসুর রহমান বলেন, “মাদ্রাসাছাত্ররা মিছিল করে বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুর করেছে। এটিকে প্রতিরোধ করার জন্য আমরা আমাদের কার্যক্রম চালিয়েছি। শহরের পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে আছে। এ ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

২৫ বিজিবির কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. ফেরদৌস কবির বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর ও আশপাশ এলাকায় শুক্রবার সন্ধ্যায় পাঁচ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি করেন।

তিনি বলেন, তারা পুলিশ সুপারের অফিস, সদর থানা, সার্কিট হাউস, জেলা শিল্পকলা একাডেমীসহ স্বাধীনতার পক্ষের বিভিন্ন স্থাপনা ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে।