বুড়িমারীতে সেই পুড়িয়ে হত্যায় ইউএনও’র ভূমিকার তদন্ত

লালমনিরহাটের বুড়িমারীতে কোরান অবমাননার গুজব রটিয়ে গত অক্টোবরে পুড়িয়ে হত্যার সময় পাটগ্রামের ইউএনও‘র ভূমিকা নিয়ে প্রশাসনিক তদন্ত হয়েছে।

লালমনিরহাট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 March 2021, 02:29 PM
Updated : 25 March 2021, 02:29 PM

বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা থেকে দুপুর পর্যন্ত বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদ হলরুমে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসক আবু জাফর।

গত ২৯ অক্টোবর বুড়িমারী বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে কোরান অবমাননার গুজবে রংপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক গ্রন্থাগারিক আবু ইউনুছ মো. সহিদুন্নবী জুয়েলকে (৫০) ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে সন্ধ্যায় পিটিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যার পর মরদেহ পুড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন পাটগ্রাম উপজেলার তৎকালীন ইউএনও কামরুন নাহার।

জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, “এটি একটি প্রশাসনিক তদন্ত। ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। ওখানে যারা কাজ করেছেন তাদের বক্তব্য নিয়ে প্রশাসনিক তদন্ত করা হয়েছে। যে সব তথ্য পেয়েছি তা কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে।”

তদন্তে ১৫ জন সাক্ষ্য দেন। গত ২১ মার্চ এক চিঠিতে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ১৩ জনকে তদন্তে উপস্থিত থাকতে বলা হয়।

পাটগ্রাম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রুহুল আমীন বাবুল বলেন, “ঘটনার সময় উপস্থিত থেকে আমি এবং বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নিশাত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিহত জুয়েল ও তার বন্ধুকে বাঁচাতে সর্বাত্মক চেষ্টা করি। ওই সময়ে পর্যাপ্ত আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য না থাকায় এ ধরণের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে।”

তদন্তকালে পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাম কৃষ্ণ বর্মণ, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রুবেল রানা উপস্থিত ছিলেন।

লালমনিরহাট ডিবি থানার ওসি এবং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওমর ফারুক জানান, এ ঘটনায় ৩১ অক্টোবর জুয়েলের চাচাত ভাই সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন।

ওই সময় পুলিশের উপর হামলার অভিযোগে পাটগ্রাম থানার উপ-পরিদর্শক শাহজাহান আলী বাদী হয়ে একটি এবং বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের অভিযোগে ওই পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সাইদ নেওয়াজ নিশাত বাদী হয়ে আরেকটিসহ মোট তিনটি মামলা হয়।

তিন মামলায় ১১৪ জন এজাহাভুক্তসহ অজ্ঞাত কয়েকশ ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। লালমনিরহাট জেলা গোয়েন্দা পুলিশ এ তিন মামলা তদন্ত করে।

মামলায় এজাহারভুক্ত ৪৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। আদালতে আত্মসমর্পন করেন ৫ জন। এদের মধ্যে ১৭ জনকে রিমান্ডে নেওয়া হয়।