গোবিন্দগঞ্জে বিস্ফোরণ ও হতাহত ‘মর্টার শেল কাটার সময়’: পুলিশ

‘কুড়িয়ে পাওয়া মর্টার শেল কাটার সময়’ গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে এবং তাদের তিনজনের প্রাণহানি হয় বলে জেলার পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন।  

গাইবান্ধা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 March 2021, 01:18 PM
Updated : 25 March 2021, 01:54 PM

বৃহস্পতিবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তৌহিদুল ইসলাম একথা বলেন।  

প্রাথমিক তদন্তে এই ঘটনার সঙ্গে জঙ্গি তৎপরতা কিংবা নাশকতার কোনো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি বলেও তিনি জানান।

বুধবার বিকালে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কামারদহ ইউনিয়নের মেকুরাই নয়াপাড়া গ্রামের আবুল কাশেম প্রধানের বাড়িতে বিকট বিস্ফোরণ ঘটে। এতে আবুল কাশেম প্রধানের ছেলে বোরহান উদ্দিন প্রধান (৩৬), একই গ্রামের কবির মিয়ার ছেলে অহেদুল ইসলাম (৩৫) ও উপজেলার মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের কুমিড়াডাঙ্গা গ্রামের তৈয়ব আলীর ছেলে রানা মিয়া ওরফে সোবহান (৩০) নিহত হন। এর মধ্যে রানা মিয়ার বুক ছিদ্র হয়ে গেছে এবং তার বাম হাতের কব্জি উড়ে গেছে। এছাড়া কয়েকজন আহতও হন।

এই ঘটনায় পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করেছে এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একই বাড়ির চার মহিলাকে আটক করেছে।

প্রেস ব্রিফিংয়ে এসপি তৌহিদুল ইসলাম বলেন, এই মর্টার শেলটি ১৯৭১ সাল অথবা এর আগের; পরিত্যক্ত অবস্থায় মাটির নিচে ছিল। মর্টার শেলটির একটি অংশ বৃহস্পতিবার সকালে নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে।

এসপি বলেন, ঢাকা-রংপুর জাতীয় মহাসড়ক ছয় লেনের উন্নয়নের কাজ চলছে। এই কাজের জন্য মুল সড়কের দুইপাশে এসকেভেটর মেশিন দিয়ে মাটি খোঁড়াখুঁড়ি করা হচ্ছে।

“খোঁড়াখুঁড়ির সময় গোবিন্দগঞ্জের অদূরে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার মোকামতলায় শ্রমিকরা সম্প্রতি একটি মর্টার শেল কুড়িয়ে পায়, যা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হাবিবুরের হাত ঘুরে নিহত বোরহান উদ্দিনের বাড়িতে চলে আসে। বুধবার বিকালে এই মর্টার শেলটি কাটাকাটির সময় বিস্ফোরিত হয়ে হতাহতের ঘটনা ঘটে।”

প্রেস ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু নাইচ মো. ইলিয়াছ, গোয়েন্দা কর্মকর্তা মো. আবদুল লতিফ প্রমুখ।

পুলিশ জানায়, এই বিস্ফোরণ এবং তিনজন নিহত হওয়ার ঘটনা তদন্তে ঢাকা থেকে আসা ১১ সদস্য বিশিষ্ট বোমা বিশেষজ্ঞ দল বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে ওই বাড়িতে তদন্ত কাজ শুরু করে। তদন্ত কাজ দুপুর ১২টায় শেষ হয়।

পরে দলটির সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করে ঢাকায় ফিরে যায় বলে গোবিন্দগঞ্জ থানার ওসি মেহেদী হাসান জানান। 

ওসি মেহেদী হাসান বলেন, এই বিস্ফোরণ ও হতাহতের ঘটনায় বগুড়ার মোকামতলার হাবিবুর রহমান (৫২) নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই বাড়ির চার মহিলাকে আটক করা হয়েছে।

এই ঘটনায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে থানায় মামলা দায়ের করার প্রক্রিয়া চলছে এবং তদন্তও চলমান রয়েছে বলে তিনি জানান। 

এদিকে, বুধবারের বিস্ফোরণ ও হতাহতের ঘটনার পর থেকে নয়াপাড়া গ্রামে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

ওই গ্রামের বাসিন্দা শাহাজাহান মিয়া বলেন, “বুধবার বিকালের ঘটনায় শান্ত গ্রামটি এখন আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পড়েছে।”