‘রাজাকারপুত্র’ পতাকা তুললে অনুষ্ঠান বর্জন করবে মুক্তিযোদ্ধারা নীলফামারীতে

নীলফামারীর ডোমারে ‘রাজাকারের সন্তান’ স্বাধীনতা দিবসে পতাকা উত্তোলন করলে সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠান বর্জন করবে বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা।

নীলফামারী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 March 2021, 02:13 PM
Updated : 23 March 2021, 06:34 PM

ডোমার উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক তোফায়েল আহমেদ ডোমার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দায়িত্বে রয়েছেন। সরকারি অনুষ্ঠানের রেওয়াজ অনুসারে অনুষ্ঠানে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকার কথা।

তবে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা বলছেন তোফায়েল আহমেদ ‘রাজাকার পরিবারের সন্তান’।

মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ডোমার উপজেলার সাবেক কমান্ডার নুরন নবী বলেন,“তোফায়েল আহমেদ একজন রাজাকার পরিবারের সন্তান। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তার পুরো পরিবার মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করেছিল।”

২০১৯ সালে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রকাশিত এবং পরে বাতিল হওয়া রাজাকারের তালিকায় তার বাবা, দাদা ও নানার নাম রয়েছে বলে জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, “মুক্তিযোদ্ধারা অনেক কষ্ট ও রক্তের বিনিময়ে এ দেশকে স্বাধীন করেছে। স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে এ রকম বিতর্কিত ব্যক্তি পতাকা উত্তোলন করতে পারে না। এটি জাতীয় পতাকার অবমাননার সামিল।

তোফায়েলকে দিয়ে স্বাধীনতা দিবসের পতাকা উত্তোলন না করতে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে স্মারকলিপি দেওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, এরপরও তিনি পতাকা উত্তোলন করলে মুক্তিযোদ্ধারা অনুষ্ঠান বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিনা শবনম এবং জেলা প্রশাসকের হাতে ২৩ জন মুক্তিযোদ্ধা স্বাক্ষরিত এ বিষয়ক একটি স্মারকলিপি তুলে দেন তারা।

এ সময় ডোমার উপজেলা সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নুরন নবী, সাবেক ডেপুটি কমান্ডার এম এ কবির, সাবেক সহকারী কমান্ডার গোলাম রব্বানী ও ফারুক প্রধানসহ ২৩ জন মুক্তিযোদ্ধা উপস্থিত ছিলেন।

এ স্মারকলিপি পাওয়ার কথা জানিয়ে জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, “এটি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। মন্ত্রণালয় থেকে যে সিদ্ধান্ত আসবে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এদিকে, এ অভিযোগ অস্বীকার করে তোফায়েল আহমেদ বলেন,“ আমরা তিন ভাই ও তিন বোন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। আমাকে রাজনৈতিকভাবে  হেয় প্রতিপন্ন করতে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।

তিনি জানান, ২০১৯ সালে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রকাশিত রাজাকারের তালিকায় ভুলবশত বাবা, দাদা ও নানার নাম অন্তর্ভূক্ত হয়েছিল।

২০১৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে পতাকা উত্তোলনের জন্য তোফায়েল আহমেদের নাম ঘোষণা করায় সেই অনুষ্ঠাওন বর্জন করেছিল স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা।