স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুক মামলা, গৃহবধূকে পেটালো ‘স্বজনরা’

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে যৌতুকের মামলা করার পর এক গৃহবধূকে লাঠিপেটা করার অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও তার স্বজনদের বিরুদ্ধে।  

ময়মনসিংহ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 March 2021, 12:20 PM
Updated : 22 March 2021, 12:21 PM

২৩ বছর বয়সী এই নারী সোমবার জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ময়মনসিংহ মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে অভিযোগ দায়ের করেছেন।

আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে দোষীদের শনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনার নির্দেশনা দিয়েছে পুলিশকে।

অভিযোগে তিনি স্বামী পাভেল মিয়া, চাচা আনোয়ার হোসেন, চাচাত ভাই তানভীন আলম, চাচাত বোন তানবিনা আক্তারকে আসামি করেন।

এই গৃহবধূর অভিযোগ, ২০১৮ সালের অক্টোবরে ফুফাত ভাই পাভেল মিয়ার সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর বিভিন্ন সময় যৌতুকের জন্য নির্যাতন করতেন পাবেল। যৌতুক না দেওয়ায় দুইবার তার গর্ভপাত করিয়েছেন পাবেল ও তার পরিবারের লোকজন।

গত বছরের ১লা নভেম্বর দশ লাখ টাকা যৌতুকের জন্য স্বামী ও তার পরিবারের সদস্যরা তাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন বলে এই গৃহবধূর অভিযোগ।

তিনি বলেন, এই ঘটনায় তিনি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আট দিন চিকিৎসা নেন। পরে কিছুটা সুস্থ হয়ে ৮ নভেম্বর তিনি বাদী হয়ে ময়মনসিংহের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন।

ওই মামলায় চলতি বছরের ১ মার্চ পুলিশ মো. পাবেল মিয়াকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠায় বলে তিনি জানান।

অভিযোগে তিনি বলেন, এর জেরে গত ১০ মার্চ তিনি মাঠে ছাগল আনতে গেলে চাচা আনোয়ার মামলা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দেন এবং মামলা তুলে না নিলে মারধর করার হুমকি দেন।

তিনি অভিযোগ করেন, মামলা তুলে নিতে রাজি না হলে চাচাত ভাই তানভীন আলম, চাচা আনোয়ার, চাচাত বোন তানবিনা আক্তার লাঠি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে ফেলে রেখে চলে যান।

পরে তার ভাই তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাপাতালে ভর্তি করেন বলে জানান।

হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়ে সোমবার [২২ মার্চ] দুপুরে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে তিনি ময়মনসিংহ অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন।

তাকে মারধর করার একটি ভিডিও ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে বলে তিনি জানান।

নির্যাতিতার ভাই বলেন, মায়ের দেওয়া কথা অনুযায়ী তার বোনকে পাভেলের কাছে বিয়ে দিয়েছিলেন। বিয়ের পর থেকেই পাভেল এবং তার পরিবারের লোকজন নানাভাবে নির্যাতন করে আসছেন। তারাও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

তিনি দোষীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান।

জেলা পুলিশ সুপার আহমার উজ্জামান বলেন, নারী নির্যাতনে দোষীদের শনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনার জন্য পুলিশকে নির্দেশনা দিয়েছে আদালত।