কক্সবাজারে নারীকে ‘শাড়ি দিয়ে গাছে বেঁধে নির্যাতন’

কক্সবাজারে ‘সুদ পরিশোধে বিলম্ব হওয়ায়’ এক নারীকে তার শাড়ি দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে; যার ভিডিও ছড়িয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

কক্সবাজার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 March 2021, 04:35 AM
Updated : 18 March 2021, 04:35 AM

পুলিশ এ ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে বলে জানিয়েছেন জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান।

চকরিয়া উপজেলার বরইতলি ইউনিয়নের হাফালিয়া কাটা এলাকার ওই নারী (৩০) এ ঘটনায় চারজনের নাম উল্লেখসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছেন।

মামলায় আসামি করা হয়েছে ওই এলাকার বাসিন্দা জহির আহম্মদ (৫০), স্ত্রী সুফিয়া খাতুন (৫০), ছেলে শওকত আলম (২৮) ও শওকতের স্ত্রী শাহিনা আক্তারকে (২৩)। তাছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও দুইজনকে আসামি করা হয়েছে।

এক মিনিট ৫৩ সেকেন্ডের ভিডিওচিত্রে দেখা গেছে, গ্রামের রাস্তার ধারে ওই নারীকে তার পরনের শাড়ি দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে রেখে এক যুবক তার চুল ধরে কিল-ঘুসি ও লাথি মারছে। একপর্যায়ের এক নারীও লাঠি হাতে উপস্থিত হয়। তিনিও লাঠি দিয়ে ওই নারীকে মারতে থাকেন। নির্যাতনের সঙ্গে গালাগালও করেন ওই নারী। পরে দুই-তিনজন নারী এসে বেঁধে রাখা নারীকে উদ্ধারের চেষ্টা করেন। তখনও তাকে নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনের পুরো সময় ওই নারীর বছর দেড়েক বয়সের সন্তান কাঁদতে থাকে।

ওই নারী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তার স্বামী নলকূপ মিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করেন। বছরখানেক আগে স্বামী অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে ভর্তি করান। সে সময় প্রতিবেশী শওকত আলমের কাছ থেকে সুদে চার হাজার টাকা ধার নেন।

“গত মাস পর্যন্ত সুদে-আসলে ১০ হাজার টাকা দাঁড়ায়। এর মধ্যে আমি আট হাজার টাকা পরিশোধ করেছি। বাকি ছিল আরও দুই হাজার টাকা। গত বৃহস্পতিবার পরিশোধ করার কথা ছিল। পরিশোধ করতে না পারায় শওকত ক্ষেপে যায়। টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে আমার পরনের শাড়ি দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করে।”

শওকত আলমের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে বন্ধ পাওয়া গেছে।

ঘটনার নিন্দা জানিয়ে নির্যাতনকারীদের শাস্তি দাবি করেছেন বরইতলি ইউপি চেয়ারম্যান জালাল আহমদ সিকদার।

চেয়ারম্যান বলেন, “নারীর ওপর পাশবিক নির্যাতন চালানোর খবর শোনার পর পুলিশকে অবহিত করেছি। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।”

পুলিশ সুপার বলেন, নারীকে নির্যাতনের ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার ঘটনাটি পুলিশের নজরে আসার পরপরই অভিযান চালানো হয়। শওকত পালিয়ে গেলেও তার বাবাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বুধবার রাতে ওই নারী বাদী হয়ে শওকতকে প্রধান আসামি করে ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলে মামলা হিসেবে নথিবদ্ধ করা হয়।

আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার।