বসুরহাটে আওয়ামী লীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে একজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন চার পুলিশ সদস্যসহ আরও অন্তত দুই ডজনের বেশি মানুষ।

নোয়াখালী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 March 2021, 04:42 PM
Updated : 9 March 2021, 08:05 PM

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বসুরহাট পৌর এলাকায় রূপালী চত্বরে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খিজির হায়াত খানকে লাঞ্ছিত করার ঘটনার প্রতিবাদে সমাবেশ চলাকালে সেখানে সংঘর্ষ বাধে।

সংঘর্ষ চলাকালে হাতবোমা বিস্ফোরণ করতে এবং দোকানপাট ও যানবাহন ভাঙচুর করতে দেখা গেছে।

সংঘর্ষে নিহত একজনের লাশ নোয়াখালী সদর হাসপাতালে এসেছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎস কর্মকর্তা সৈয়দ মহিউদ্দিন আবদুল আজিম।

নিহতের নাম মো. আলাউদ্দিন (৩২)। তার বাবার নাম মমিনুল হক। তার বাড়ি কোম্পানীগঞ্জের চর ফকিরায়।

সংঘর্ষে ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে হৃদয় নামে গুলিবিদ্ধ একজনকে আশংকাজনক অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়।

বাকিদেরকে ২৫০ শয্যা নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বুধবার সকাল ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত বসুরহাট পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে সব ধরণের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি মীর জাহিদুল হক রনি জানান, সংঘর্ষে তিনিসহ চার পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এছাড়া উভয় পক্ষে আরও অন্তত ২৫ জন আহত হয়।

পরে পুলিশ ও র‌্যাব লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে জানিয়ে তিনি বলেন, ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

গত সোমবার নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার বিরুদ্ধে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি খিজির হায়াত খান মারধরের অভিযোগ তোলেন।

খিজির খান বলেছিলেন, সোমবার বিকাল ৫টার দিকে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে ছিলেন।

“হঠাৎ করেই কাদের মির্জা ও তার ছোট ভাই শাহাদাত হোসেনসহ বেশ কয়েকজন এসে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন। এক পর্যায়ে আমার পাঞ্জাবি টেনে ছিঁড়ে ফেলেন কাদের মির্জা। আমাকে বসুরহাট বাজারে আসতে নিষেধ করেন মির্জা।”

ওই ঘটনার প্রতিবাদে বসুরহাট পৌর এলাকার রূপালী চত্বরে মঙ্গলবার বিকাল থেকে সমাবেশ চলছিল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যা ৬টার দিকে পৌর ভবন থেকে একদল লোক বের হয়ে সমাবেশের লোকজনকে ধাওয়া করে। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। পৌর ভবন থেকে আসার লোকজনকে তারা ‘আবদুল কাদের মির্জার অনুসারী হিসেবে শনাক্ত করছেন।

এরপর বসুরহাট পৌর এলাকার বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ ছড়ি পড়ার খবর পাওয়া যায়। এ সময় হাতবোমা বিস্ফোরণের শব্দ, দোকানপাট ও যানবাহন ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। রাত ১০টা পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকা থেকে সংঘর্ষের খবর পাওয়া যাচ্ছিল।

জেলা পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন বলেন, উপজেলা প্রশাসন বুধবার সকাল ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত বসুরহাট পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে সব ধরণের সভা- সমাবেশ, মিছিল এমনকি এক সাথে তিনজনে বেশি জমায়েত নিষিদ্ধ করেছে।

১৯ ফেব্রুয়ারি উপজেলার চাপরাশিরহাট পূর্ব বাজারে পৌর মেয়র আবদুল কাদের মির্জা এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের অনুসারীদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছিল। সেদিন সাংবাদিক বোরহান উদ্দিন মুজাক্কির গুলিবিদ্ধ হন, পরদিন ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।