বাংলাদেশ-ভারত সেতু উদ্বোধন: উন্নয়ন-অগ্রগতির প্রত্যাশা স্থানীয়দের

বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতুর উদ্বোধনে তিন পার্বত্য জেলায় উন্নয়নে আরও গতির সঞ্চার হবে বলে প্রত্যাশা করছেন স্থানীয়রা।

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধিআবু দাউদ, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 March 2021, 03:45 PM
Updated : 9 March 2021, 03:57 PM

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মঙ্গলবার দুপুরে এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে ‘বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু-১’ এর উদ্বোধন করেন। একইসঙ্গে ত্রিপুরার সাবরুমে একটি ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্টেরও ভিত্তি স্থাপন হয়।

বাংলাদেশের খাগড়াছড়ি জেলার রামগড় এবং ভারতের ত্রিপুরার সাব্রুম দিয়ে ফেনী নদীর ওপর দেশের প্রথম আন্তর্জাতিক সেতুটি নির্মিত হয়েছে।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের খাগড়াছড়ির নির্বাহী প্রকৌশলী শাকিল মোহাম্মদ ফয়সাল বলেন, সেতুটি উদ্বোধন উপলক্ষে সেতুর দুধারে রঙিন পতাকায় সুসজ্জিত করা হয়। তবে বাংলাদেশ অংশে এই নিয়ে কোনো আয়োজন ছিল না।

এই সেতু দিয়ে কবে নাগাদ মালামালবাহী ট্রাক লরি চলাচল শুরু হবে তাও জানা যায়নি। 

এই সেতুর মাধ্যমে উভয় দেশের সম্পর্ক আরও নতুন উচ্চতায় উঠবে বলে স্থানীয়দের প্রত্যাশা।  

স্থানীয় সাংবাদিক রতন বৈঞ্চব ত্রিপুরা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ত্রিপুরা ও মিজোরাম রাজ্যসহ সেভেন সিস্টারস খ্যাত ভারতের বেশ কিছু অঞ্চলের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ‘রামগড় স্থলবন্দর’ চালুর অংশ হিসেবে এটি নির্মাণ করা হয়েছে।

“এর ফলে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার আর্থ-সামাজিক অবস্থার আরও উন্নতি ঘটবে বলে আশা করি।”

রামগড় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বিশ্ব প্রদীপ কার্বারি বলেন, দেশের প্রথম আন্তর্জাতিক সেতুর উদ্বোধন হওয়ার পর এখন রামগড় স্থলবন্দরটি পুরোদমে চালু হলে এই অঞ্চলের সামগ্রিক আর্থ সামাজিক উন্নয়নে গতি আসবে।

রামগড়ের স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা রফিকুল ইসলাম কামাল বলেন, এর মাধ্যমে রামগড়সহ সমগ্র খাগড়াছড়ির মানুষের ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসার, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ছাড়াও বেকারদের জন্য কর্মসংস্থান তৈরি হবে।

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী অপু বলেন, “বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু উদ্বোধনের মাধ্যমে উভয় দেশের মধ্যে ঐতিহাসিক যোগসূত্র স্থাপিত হয়েছে। এজন্য বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারত সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।”

শরণার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা বলেন, “কাঙ্ক্ষিত সেতুটি উদ্বোধন হওয়ায় এর মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে ত্রিপুরার সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হবে। এছাড়াও পার্বত্য চট্টগ্রামের পর্যটন শিল্পের জন্যও স্থলবন্দরটি গেটওয়ে হয়ে উঠবে বলেও আশা করা হচ্ছে।”

১ দশমিক ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতু রামগড়ের সঙ্গে ভারতের ত্রিপুরার সাবরুমকে যুক্ত করেছে। এই প্রথম কোনো নদী সেতু দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্ত যুক্ত হল।

ভারতের ত্রিপুরা, মিজোরামসহ পূর্বাঞ্চলীয় সাত রাজ্যের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ বাড়ানোর লক্ষ্যে ২০১৫ সালের ৬ জুন দুই প্রধানমন্ত্রী এ সেতুর ভিত্তিস্থাপন করেছিলেন।

১৩৩ কোটি রুপি ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করেছে ভারতের ন্যাশনাল হাইওয়েজ অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড-এনএইচআইডিসিএল।

এই সেতু থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের দূরত্ব মাত্র ৮০ কিলোমিটার। ফলে বন্দর থেকে ত্রিপুরাসহ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে পণ্য পরিবহন অনেক সহজ হয়ে যাবে।