রোববার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক পার্থ শংকর পাল জানান, মেহেরুন্নেসার শরীরের ৪৬ ভাগ এবং হাফসার শরীরের ২৭ শতাংশ পুড়ে গেছে।
“তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক।”
ডা. পার্থ আরও জানান, দুজনের কণ্ঠনালী পুড়ে গেছে। মা ও মেয়েকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) পাঠানো হয়েছে।
গত শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টায় ফেনী শহরের শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়কের শফিক ম্যানশনে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে দুই মেয়েকে নিয়ে থাকতেন মেহেরুন্নেসা (৩৮)। এ বিস্ফোরণে তার দুই মেয়ে ফারহা ইসলাম (১৮) এবং হাফসা ইসলামও (১৫) আহগত হন।
শনিবার বিকেলে ছোট মেয়েসহ মেহেরুন্নেসার অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাদের ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। তবে বড় মেয়ে ফারহার শরীরের পাঁচ শতাংশ দগ্ধ হওয়ায় তাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।
দগ্ধদের স্বজন শহিদুল ইসলাম জানান, মেহেরুন্নেসার স্বামী মাহবুবুল ইসলাম সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী। তাদের বাড়ি চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের করেরহাট ইউনিয়নের ছত্তরুয়া গ্রামে। মেয়েদের পড়ালেখার জন্য গত এক দশক ধরে তারা ফেনীকে বসবাস করছে।
মেহেরুন্নেসার বড় মেয়ে ফারাহ ইসলাম এবার উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছেন এবং ছোট মেয়ে হাফসা ইসলাম স্থানীয় হলিক্রিসেন্ট স্কুলে দশম শ্রেণির ছাত্রী।
বোমার আলাম মেলেনি
এদিকে, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিটের উদ্ধৃতি দিয়ে ফেনীর পুলিশ সুপার খন্দকার নুরুন্নবী বলেন, ফেনীর ফায়ার সার্ভিস ও ডিএমপির বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিট ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছে ওই বাসায় বোমা বিস্ফোরণের আলামত নেই।
তারপরও পুলিশের অ্যান্টি টেররিজম (বোম ডিসপোজাল) ইউনিটের আরও একটি দল আসবে। তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখবে বলেন তিনি।
পুলিশ সুপার জানান, প্রাথমিকভাবে তারা ধারণা করছেন, ওই ঘরে গ্যাসের চুলা খোলা ছিল। সেখান থেকে গ্যাস বের হয়ে বদ্ধ ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। পরে ইলেকট্রিক র্যাকেট দিয়ে মশা মারার চেষ্টা করলে সেটি স্পার্ক করে বিস্ফোরণ হয়।
এ বিস্ফোরণে ওই ঘরের দরজা-জানালা ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। এছাড়া পাশের ফ্ল্যাট ছাড়াও ভবনের ষষ্ঠ, তৃতীয় এবং চতুর্থ তলার সব ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে যায়।
দগ্ধদের সঙ্গে কথা বলেও বিস্ফোরণে এই কারণ পাওয়া গেছে বলে জানান তিনি।