বরগুনায় উপজেলা চেয়ারম্যান ও মেয়র সমর্থকদের সংঘর্ষ

বরগুনার আমতলী পৌর মেয়র ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়েছে।

বরগুনা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 March 2021, 03:07 PM
Updated : 1 March 2021, 03:07 PM

সোমবার আমতলী উপজেলা সদরে এই সংঘর্ষ চলাকালে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে; সাতটি মোটরসাইকেল ভাংচুর হয় এবং অন্তত ১১ জন আহত হয়।

আহতদের মধ্যে দুই জনকে পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

আইনশৃংখলা রক্ষায় শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। 

দুই বছর আগে নির্বাচিত আমতলী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য গোলাম ছরোয়ার ফোরকানকে ঋণ খেলাপীর অভিযোগে পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সামসুদ্দিন আহম্মেদ ছজুকে চেয়ারম্যান বিজয়ী ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশনকে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে গেজেট করার আদেশ দেয় আদালত।

গত ১৭ ফেব্রুয়ারি  বরগুনা যুগ্ম জেলা জজ প্রথম আদালত ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারক আল মামুন এই রায় দেন।

এই রায়ের বিরুদ্ধে গোলাম ছরোয়ার ফোরকান রোববার বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালত ও নির্বাচনী আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল করেন।

আপিল আদালতের বিচারক মো. হাসানুল ইসলাম মামলাটি আমলে নিয়ে ট্রাইব্যুনালের রায় স্থগিত করে দেন। এতে আগের চেয়ারম্যান পদে বহাল থাকেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রায় স্থগিত হওয়ায় উপজেলা চেয়ারম্যানের উচ্ছ্বসিত কর্মী-সমর্থকরা সোমবার সকাল ১১টার দিকে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা করে ফোরকানকে আমতলী উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে নিয়ে আসেন এবং সংবর্ধনার আয়োজন করেন।

এদিকে, তাদের প্রতিপক্ষের কয়েকশ লোক সকালে উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে অবস্থান নেয়।

এরপর উপজেলা চেয়ারম্যান ও তার সমর্থকরা  ইউএনও অফিসের সামনে, চেয়ারম্যানের অফিস ও ইউএনও অফিসের দোতালায় অবস্থান নেন।

আমতলী থানার ওসি মো. শাহ আলম হাওলাদার বলেন, এক পর্যায়ে দুপক্ষের লোকজন ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপে লিপ্ত হয়।

“ওই সময় পুলিশ উভয় পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে তাৎক্ষণিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে উভয়পক্ষকে উপজেলা পরিষদ কম্পাউন্ড থেকে সরিয়ে দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।”

আমতলী উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মো. মতিয়ার রহমান বলেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফোরকান পটুয়াখালী থেকে তার ভাই  যুবদলের সভাপতির মনিরুজ্জামান লিটনের নেতৃত্বে আমতলীতে কয়েকশ ‘সন্ত্রাসী বাহিনী’ এনে আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকদের উপর হামলা চালায়।

তিনি এটা প্রতিরোধ করেছেন দাবি করে বলেন, “ফোরকানের কর্মী-সমর্থকরা আমার কর্মী-সমর্থকদের উপর হামলা করেছে। হামলায় ছয় জন কর্মী আহত হয়েছে। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।”

উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম সরোয়ার ফোরকান বলেন, “পৌরসভার সামনে দিয়ে আমার কর্মী-সমর্থকরা বাড়ি ফিরে যাওয়ার সময় আমতলী পৌরসভার মেয়র মতিয়ার রহমানের ‘সন্ত্রাসী’ কর্মী-সমর্থকরা হামলা করেছে।”

হামলায় তার পাঁচ সমর্থক আহত হয়েছেন এবং তাদের মধ্যে জাহাঙ্গীর (২৫) ও সিরাজ (৫০) নামের দুজনকে আমতলী হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

তাদের সাতটি মোটরসাইকেল ভাংচুর করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।  

তিনি মতিয়ার রহমানের অভিযোগ অস্বীকার  করে বলেন, “আমার সাথে বিএনপি এবং সন্ত্রাসী কোনো বাহিনী ছিল না। যারা ছিল সবাই আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগের কর্ম-সমর্থক।”

বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এসএম তারেক রহমান বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যথেষ্ট সজাগ রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ছিল। পরিস্থিতি রক্ষায় শহর জুড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।