‘যৌন হয়রানি’: রাবি অধ্যাপককে নিষিদ্ধের সুপারিশ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক বিষ্ণু কুমার অধিকারীকে একাডেমিক কার্যক্রম থেকে ছয় বছরের জন্য নিষিদ্ধ করার সুপারিশ করা হয়েছে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Feb 2021, 11:41 AM
Updated : 27 Feb 2021, 11:41 AM

শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আব্দুস সোবহানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ৫০৪ তম সিন্ডিকেট সভায় এ সুপারিশ করা হয় বলে জানিয়েছেন সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. হাবিবুর রহমান।

অধ্যাপক হাবিবুর বলেন, “ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ওঠা যৌন হয়রানির অভিযোগের সত্যতা সংক্রান্ত প্রতিবেদন আজকে সিন্ডিকেটে উপস্থাপিত হয়। সেখানে ওই শিক্ষককে ক্লাস-পরীক্ষাসহ সব ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম থেকে ছয় বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা এবং ইনক্রিমেন্ট বন্ধ করা হবে।”

এছাড়া আগামী ১০ বছরে কোনো প্রমোশন আবেদন করতে পারবে না সুপারিশ বাস্তবায়নের আগে তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সামনের কোনো সিন্ডিকেটে বিষয়টি আবারও তোলা হবে বলে জানান তিনি।

২০১৯ সালের ২৫ জুন শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) চতুর্থ বর্ষের এক নারী শিক্ষার্থী পরিচালক এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর বিষ্ণু কুমার অধিকারীর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি এবং মানসিকভাবে উত্ত্যক্ত করার লিখিত অভিযোগ করেন।

পরে দ্বিতীয় বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী আইইআর পরিচালকের কাছে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ করেন।

এ ঘটনায় পরদিন ইনস্টিটিউটের এক জরুরি সভায় বিষ্ণু কুমারকে দ্বিতীয় এবং চতুর্থ বর্ষের একাডেমিক কার্যক্রম থেকে সাময়িক অব্যাহতি দিয়ে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

২৮ জুন অভিযোগপত্র প্রত্যাহার করার জন্য বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে উল্লেখ করে ওই দুই শিক্ষার্থী নিরাপত্তা চেয়ে নগরীর মতিহার থানায় পৃথকভাবে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

৩০ জুন বিষ্ণু কুমারের বিচার দাবি করে মানববন্ধন করে শিক্ষার্থীরা।

পহেলা জুলাই সব বর্ষের একাডেমিক কার্যক্রম থেকে তার অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করে শিক্ষার্থীরা।

২১ জুলাই ওই বিভাগের অনুসন্ধান কমিটি এ ঘটনার সত্যতা পাওয়া কথা জানায়। পরে অভিযোগটি ইন্সটিটিউট থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নীপিড়ন সেলে পাঠানো হয়।

এরপর বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করেন সেলের সভাপতি ও প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. রেজিনা লাজ, সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক হাবিবুর রহমান এবং রসায়ন বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আখতার ফারুক। ড. আখতার ফারুক পরে মারা যান।

তদন্ত কমিটির প্রধান প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. রেজিনা লাজ বলেন, তদন্ত করে অভিযোগটির সত্যতা পাওয়া গেছে। সম্প্রতি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে।