রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘চাকরির নামে’ ঘুষের অভিযোগ, তদন্তে কমিটি

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘কর্মকর্তা পদে নিয়োগের ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে’ এক চাকরি প্রার্থীর কাছ থেকে ১৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তিন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে।

রংপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Feb 2021, 02:58 PM
Updated : 25 Feb 2021, 02:58 PM

টাকা লেনদেনের একটি ভিডিও সংবাদকর্মীদের হাতে এসেছে। সেখানে রংপুর নগরীর একটি হোটেলে টাকা লেনদেন করতে দেখা গেছে।

টাকা দিয়ে চাকরি না পাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন মো. রুবেল সাদী নামের ওই চাকরি প্রার্থী।

এই অভিযোগের বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সহ-উপাচার্য, ট্রেজারার, রংপুর পুলিশ সুপার, র‌্যাব এবং দুর্নীতি দমন কমশিনকে অনুলিপি দিয়ে অবহিত করেছেন রুবেল সাদী।

এদিকে, বিষয়টি তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি কমিটি গঠন করেছে। 

যাদের বিরুদ্ধে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তারা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের কম্পিউটার অপারেটর শেরেজামান সম্রাট, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সেকশন অফিসার মনিরুজ্জামান পলাশ এবং মাস্টাররোল কর্মচারী গুলশান আহমেদ শাওন।

লিখিত অভিযোগে রংপুরের মিঠাপুকুরের বাসিন্দা রুবেল সাদী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সেকশন অফিসার পদে চাকরি দেওয়ার কথা বলে তার সঙ্গে ১৬ লাখ টাকার চুক্তি করেন এই তিন কর্মকর্তা-কর্মচারী সম্রাট, পলাশ ও শাওন। চুক্তি অনুযায়ী তিন দফায় তাদের ১৩ লাখ টাকা দেন এবং বাকি তিন লাখ টাকা যোগদানের সময় পরিশোধ করার কথা।

অভিযোগে তিনি বলেন, কিন্তু টাকা নেওয়ার পর চাকরি দিতে প্রথমে টালবাহানা, পরবর্তীতে চাপ দেওয়ার পর তাকে নিয়োগপত্রের একটি ফটোকপি দিয়ে যোগদান করতে বলে তারা। এরপর নিয়োগপত্র প্রমাণ করতে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলে জানতে পারেন সেটি জাল নিয়োগপত্র।

পরে টাকা ফেরত চাইলে তাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ রুবেলের।

এই বিষয়ে শেরেজামান সম্রাট ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ভিডিওতে যেটা দেখা যাচ্ছে সেটা আমার ব্যবসায়িক টাকা লেনদেনের বিষয়। এক ব্যবসায়ীর সাথে আমার দীর্ঘদিনের শত্রুতার কারণে এমনটি হয়েছে। আমার দুই সহকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে আমি সেদিন ব্যবসার বিরোধ মিটমাট করতে গেছিলাম।”

ভিডিওতে নিয়োগ নিয়ে আলোচনার বিষয়ে সব ‘ষড়যন্ত্র’ বলে উল্লেখ করেন তিনি।

লিখিত অভিযোগ ও নিয়োগপত্রের বিষয়ে সম্রাট আরও বলেন, “ভুয়া নিয়োগপত্র সম্পর্কে আমি কিছু জানি না। আর চাইলেই যে কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ করা যায় এখন।”   

তবে মনিরুজ্জামান পলাশ ও গুলশান আহমেদ শাওনকে অফিসে গিয়ে পাওয়া যায়নি। তারদের ব্যবহৃত মোবাইলে ফোন করে বন্ধ পাওয়া গিয়েছে।

এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচায অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, উপ-উপাচায অধ্যাপক সরিফা সালোয়া ডিনা, রেজিস্ট্রার আবু হেনা মুস্তফা কামালকে কয়েকবার ফোন করা হলেও কেউ রিসিভ করেননি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের সহকারী প্রশাসক তাবিউর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, চাকরির নামে ভুয়া নিয়োগপত্র প্রদানের ঘটনায় সহকারী প্রক্টর ও মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাসুদ-উল-হাসানকে তদান্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট প্রদানের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এই বিষয়ে উপার্চাযের পিএ আবুল কালামকে সার্বিক সহযোগিতা করতে বলা হয়েছে বলেও তিনি জানান।