রোববার বেলা ১১টায় ফরিদপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এই ‘গুরুদক্ষিণা প্রদানোৎসব’ আয়োজন করে ফরিদপুর নাগরিক মঞ্চ।
এ অনুষ্ঠানে ৮৭ বছর বয়সী এই প্রবীণ গুরুর জীবন ও কর্ম ভিত্তিক গ্রন্থ ‘মাস্টার মশাই’ এর মোড়ক উন্মোচন করাও হয়েছে।
প্রারম্ভিক বক্তব্যে ‘মাস্টার মশাই’ গ্রন্থটির সম্পাদক বিপ্লব বালা বলেন, বিশ্ব সংসারে বাঙালির অর্জন তুলনারহিত কিন্তু বাঙালি জানে না কী তারা অর্জন করেছে। একুশ তেমনই একটি অর্জন।
এদিনে নিজেদের প্রচলিত রীতিনীতির মধ্যে আটকে না রেখে ভিন্ন মাত্রা দেওয়ার তাগিদে এ আয়োজন জানিয়ে তিনি বলেন, মানুষের প্রধান শক্তি সুর। এই সুরের কাজ যারা করে যান, যারা বিলিয়ে যান তাদেরই একজন করুণাময় অধিকারী।
“তিনি গত ৬০ বছর ধরে সুরের সাধনা করে আসছেন। তার হাজার হাজার শিক্ষার্থী দেশে এবং বিদেশে ছড়িয়ে আছেন। আজকের দিনে এমন একজন গুণীজনকে সম্মাননা জাননোর উপযুক্ত দিন। এ কারণে আজকের দিনটি সফল করতে এ আয়োজন।”
ফরিদপুর শহরের রথখোলার বাসিন্দা করুণাময় অধিকারী ৬০ বছর ধরে সংগীত শিখিয়ে আসছেন। ফরিদপুর সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রাক্তন এ সংগীত শিক্ষক ‘উত্তরণ’ নামে একটি সংগীত বিদ্যালয় স্থাপনও করেছিলেন, এছাড়া তার বাড়িতেও শিক্ষার্থীদের শুদ্ধ সংগীতের তালিম দিয়ে থাকেন।
প্রথমে মো. আলাউদ্দিনের বাঁশির সুর ছড়িয়ে পড়ে মিলনায়তনে। এরপর সমবেত কণ্ঠে ‘এদিন আজি কোন ঘরে গো খুলে গেল দ্বার’ গাইতে গাইতে সংগীতের এ গুণীজনকে মঞ্চে আনা হয়। সেখানে প্রদীপ জ্বালিয়ে অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন করুণাময় অধিকারী।
অনুষ্ঠানে ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান বলেন, মানুষ সুর নিয়ে বেঁচে থাকে। এজন্য প্রত্যেক বিদ্যালয়ে একজন করে সংগীত শিক্ষক প্রয়োজন। এ বিষয়টি বিশেষ গুরুত্বের সাথে ভেবে দেখতে হবে।
সম্মাননা স্মারক পাঠ করেন জেলা বিএমএ সভাপতি আসম জাহাঙ্গীর চৌধুরী।
সংগীত গুরুকে ধুতি ও উত্তরীয় পরিয়ে দেন শিশু সংগঠন ফুলকির সভাপতি অঞ্জলি বালা এবং ফরিদপুর সচেতন নাগরিক কমিটির সাবেক সভাপতি আলতাফ হোসেন।
অনুভূতি প্রকাশ করেন শিশু সংগঠন ফুলকির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল আজম, ‘মাস্টার মশাই’ গ্রন্থের প্রকাশক মেহেদী হাসান।
মাস্টার মশাইকে নিয়ে লেখা কবিতা পাঠ করে ব্রততী দাস। সংগীত পরিবেশন করেন বাউল শিল্পী ফকির আজমল শাহসহ অন্যান্যরা।
অনুষ্ঠানের সভাপতি ফরিদপুর নাগরিক মঞ্চের সভাপতি আওলাদ হোসেন বলেন, নাগরিক অধিকার রক্ষার প্রত্যয়ে ফরিদপুর নাগরিক মঞ্চ প্রতিষ্ঠি হলেও পাশাপাশি ফরিদপুরের অতীত ঐতিহ্য রক্ষা করতে কাজ করবে নাগরিক মঞ্চ। এ লক্ষ্যে আজকের এ আয়োজন।
সমবেত জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় অনুষ্ঠান।