পরিবহন শ্রমিকরা শনিবার সকাল থেকে রূপাতলী বাস টার্মিনালে এবং শিক্ষার্থীরা দেড় কিলোমিটার দূরে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কে লাঠিসোঁটা নিয়ে অবস্থান নিয়ে আছেন।
টায়ার জ্বালিয়ে সড়কে দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভে পুরো শহরে বিরাজ করছে উত্তেজনা।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে দুই পক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে বলে বরিশাল কোতোয়ালি থানার ওসি নুরুল ইসলাম জানিয়েছেন।
গত মঙ্গলবার দুপুরে নগরীর রূপাতলীতে বিআরটিসির কাউন্টারে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে লাঞ্চিত করার ঘটনায় এই দ্বন্দ্বের সূত্রপাত।
এর প্রতিবাদে বুধবার দিনভর বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় শিক্ষার্থীরা।
পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আশ্বাসে আসামিদের গ্রেপ্তারে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়ে সেদিন অবরোধ স্থগিত করে শিক্ষার্থীরা।
কিন্তু পুলিশ দুই পরিবহন শ্রমিককে গ্রেপ্তার করলে শনিবার নতুন করে পরিস্থিতির অবনতি হয়।
এর প্রতিবাদে এবং গ্রেপ্তার শ্রমিকদের মুক্তির দাবিতে শনিবার বেলা ১১টার দিকে রূপাতলী বাসস্ট্যান্ড এলাকা অবরোধ করে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা।
অন্যদিকে আসল হামলাকারীদের ‘আড়াল করতে’ দুই শ্রমিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে অভিযোগ তুলে প্রকৃত দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা সকাল ১০টার দিকে ক্যাম্পাসের সামনে বরিশাল-কুয়াকাটা সড়ক অবরোধ করেন।
এ পরিস্থিতিতে বরিশাল থেকে দক্ষিণের ৫ জেলার ১৭ রুটে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
মাহমুদ হাসান তমাল নামে আরেক ছাত্র বলেন, “হামলায় আহত ছাত্ররা হামলাকারীদের চিনতে পেরেছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা করেছে। মূল হামলাকারীদের আইনের আওতায় না আনা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন চলবে।”
অন্যদিকে বরিশাল-পটুয়াখালী মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাওসার হোসেন শিপন বলেন, “ছাত্রদের সাথে বিআরটিসির কর্মচারীদের ঝামেলা হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ অন্যায়ভাবে আমাদের দুই শ্রমিককে গ্রেপ্তার করেছে।”
গ্রেপ্তার শ্রমিকদের মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে বলে জানান শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সুলতান মাহমুদ।
এদিকে পরিস্থিতি শান্ত করতে পুলিশের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও ফের আলোচনার উদ্যোগ নিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি সহকারী অধ্যাপক আরিফ হোসেন বলেন, “আমরা শিক্ষার্থীদের ডেকেছি। আলোচনা চলছে। আশা করছি সমাধান আসবে।”