সোমবার কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ বিশেষ আদালতের বিচারক মো. আশরাফুল ইসলাম আসামির উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডিত মোস্তফা হাওলাদার ২০১০ সালে পুলিশের জ্যেষ্ঠ উপ-পরিদর্শক (সিএসআই) হিসেবে কুষ্টিয়া বিচারিক হাকিম আদালতের মালখানায় কর্মরত ছিলেন। দুই বছর আগে তিনি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেছেন।
তাকে দুর্নীতি দমন আইনের দুইটি ধারায় দণ্ড দেওয়া হয়েছে। একটি ধারায় তার এক বছর কারাদণ্ড এবং আরেকটি ধারায় দুই বছর কারাদণ্ড ও ৭০ হাজার টাকা জরিমারা হয়েছে। দুইটি সাজা পরপর কার্যকর হবে; তাই তাকে তিন বছর কারাভোগ করতে হবে।
মামলার আরেক আসামি আদালত পুলিশ পরিদর্শক কায়েম উদ্দিনকে খালাস দেয়া হয়েছে।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১০ সালে মোস্তফা হাওলাদার কুষ্টিয়া মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের মালখানায় দায়িত্ব পালন করছিলেন। ওই সময় দুইটি মামলা নিষ্পত্তির পর জরিমানার ৪৩ হাজার টাকা এবং ২০ হাজার ২০০ টাকা আদায় করেন তিনি। নিয়মানুযায়ী সরকারি কোষাগারের এই টাকা ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে জমা দেওয়ার দায়িত্ব ছিল মোস্তফা হাওলাদারের উপর।
অভিযোগে বলা হয়, কিন্তু তিনি টাকা জমা দিয়েছেন ৪৩ হাজারের স্থলে ৩ হাজার এবং ২০ হাজার ২শ টাকার স্থলে ২শ টাকা। সেই সঙ্গে জমা দেওয়া ওই ট্রেজারি চালানের কপিতে ঘষামাজা করে ৩ হাজারকে ৪৩ হাজার এবং ২শ টাকাকে ২০ হাজার ২শ টাকা দেখিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জমা করেন।
মামলায় আরও বলা হয়, বিষয়টি পরবর্তীতে নিরীক্ষায় ধরা পড়লে আদালত তদন্ত করে দোষীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশ সুপারকে আদেশ দেয়। আদালতের আদেশে পুলিশ তদন্ত শেষে অর্থ আত্মসাতের প্রাথমিক সত্যতা পেলেও মোস্তফা হাওলাদারের সংশ্লিষ্টতা পায়নি বলে জানায়।
দুদকের আইনজীবী আল মুজাহিদ ইসলাম মিঠু জানান, বিষয়টি আদালতের নজরে এলে আদালত দুদককে তদন্তসহ মামলা দায়েরের আদেশ দেয় এবং দুদক তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক সাহার আলী বাদী হয়ে ২০১০ সালের ১২ ডিসেম্বর কুষ্টিয়া সদর থানায় আদালত পরিদর্শক মো. কায়েম উদ্দিন এবং আদালত পুলিশের জ্যেষ্ঠ উপ-পরিদর্শক মোস্তফা হাওলাদারের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত শেষে দুদক ২০১১ সালের এপ্রিলে অভিযোগপত্র দেয়।
আল মুজাহিদ ইসলাম মিঠু আরও জানান, আদালত মামলার দুইটি ধারার মধ্যে একটিতে এক বছর কারাদণ্ড এবং অপরটিতে দুই বছরসহ ৭০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড হয়েছে।
সেই সঙ্গে অপর আসামি কায়েম উদ্দিনকে খালাস দেওয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান।