চাঁদপুরের সেই প্রতিবন্ধী কৃষকের পাশে জেলা প্রশাসন

চাঁদপুরের সেই প্রতিবন্ধী কৃষক বিল্লাল হোসেনের পাশে দাঁড়িয়েছে জেলা প্রশাসন। 

চাঁদপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Feb 2021, 06:03 PM
Updated : 11 Feb 2021, 06:04 PM

বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ তার কার্যালয়ে বিল্লাল হোসেনের হাতে ২০ হাজার টাকা তুলে দেন।

এছাড়া সমাজ সেবা কার্যালয়ের মাধ্যমে বিল্লাল হোসেনকে সহজ শর্তে ২৫ হাজার টাকার ক্ষুদ্র ঋণের ব্যবস্থা করা হয়।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরকে কৃষি কাজে সহায়তা প্রদান এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য সিভিল সার্জনকে অনুরোধও জানান জেলা প্রশাসক।

এর আগে গত রোববার ফরিদগঞ্জ উপজেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ের উদ্যোগে কৃষক বিল্লালকে প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড দেওয়া হয়েছে।

কয়েকদিন আগে বিল্লাল হোসেনকে নিয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে সংবাদ প্রকাশিত হয়।

জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, গণমাধ্যমে তিনি বিল্লাল হোসেনের সংবাদ জানতে পেরেছেন। বিল্লাল শারীরিক প্রতিবন্ধী হয়েও কারো কাছে হাত পাতেননি। অনেক কষ্টে কৃষিকাজ করে সংসার চালাচ্ছেন।

“বিষয়টি আমাদের খুবই অনুপ্রাণিত করেছে। আমরা তার পাশে দাঁড়াতে পেরে গর্বিত বোধ করছি। তিনিই প্রকৃত মানুষ। অনেকেই আছে যারা শারীরিকভাবে সক্ষম হয়েও ভিক্ষাবৃত্তি করে। কিন্তু তিনি শারীরিকভাবে অক্ষম হলেও আত্মমর্যাদা বিসর্জন দেননি।”

জেলা প্রশাসক আরও বলেন, “ইতিমধ্যে সমাজ সেবা কার্যালয়ের মাধ্যমে তাকে প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড করে দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নগদ ২০ হাজার টাকা তার হাতে তুলে দিয়েছি; সমাজ সেবা কার্যালয়ের উদ্যোগে সহজ শর্তে ২৫ হাজার টাকার একটি ক্ষুদ্র ঋণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।”

জেলা প্রশাসনের এই ‘ক্ষুদ্র’ সহায়তা কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যতে বিল্লাল আরও ভালোভাবে জীবনযাপন করতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেন অঞ্জনা।

আগামীতে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর তাকে কৃষি কাজে সহায়তা করবে এবং সিভিল সার্জন অফিস তার চিকিৎসায় সহায়তা করবে বলেও জেলা প্রশাসক জানান।

চাঁদপুরের সিভিল সার্জন ডা. শাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, ইতিমধ্যে কৃষক বিল্লাল হোসেনকে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দুইজন অর্থপেডিক সার্জনের তত্ত্বাবধায়নে তার পায়ের ক্ষতের পরীক্ষা নিরীক্ষা করে চিকিৎসা করা হচ্ছে। পরবর্তীতে তাকে ঢাকায় নিয়ে উন্নত কৃত্রিম পায়ের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। এজন্য তাকে কোনো প্রকার অর্থ খচর করতে হবে না।

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার মদনেরগাঁও এলাকার বাসিন্দা কৃষক বিল্লাল হোসেন গাজী। ১২ বছর আগে ধানক্ষেতে কাজ করতে গিয়ে বিষাক্ত কিছুর সংস্পর্শে তার পায়ে পচন ধরে। ভালো না হওয়ায় ১০ বছর আগে তার পা দু’টি কেটে ফেলা হয়। কিন্তু পঙ্গুত্বের কাছে হার মেনে থেমে যায়নি তিনি। কৃত্রিম পায়ের সাহায্যে অতি কষ্টে হাঁটা চলা করে কৃষি কাজ করে নিজের ও পরিবারের সদস্যদের জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি।