পটুয়াখালীতে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল, সেই যুবক উদ্ধার

কথিত অপহরণের ছয় দিন পর পটুয়াখালীতে এক যুবককে উদ্ধারের খবর দিয়েছে পুলিশ; যাকে বেঁধে নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়েছিল।

পটুয়াখালী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Feb 2021, 05:00 PM
Updated : 10 Feb 2021, 05:00 PM

বুধবার সকাল ৯টার দিকে মহিপুরের লতাচাপলী ইউনিয়নের মহিপুর স্লুইজগেট এলাকায় একটি নৌকায় করে রায়হান আহমেদকে (২২) আসতে দেখা গেছে একটি ভিডিওতে।

ওই নৌকার দুই মাঝি জানান, তারা ফাতরার বন এলাকা থেকে রায়হানকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। পরে স্থানীয়রা রায়হানকে মহিপুর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন।

তবে পুলিশ বলছে, রায়হান আত্মগোপনে ছিল।

এই ঘটনায় বুধবার দুপুরে পটুয়াখালী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

গণমাধ্যম কর্মীদের হাতে আসা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, একটি নৌকায় রায়হানকে দুই হাত বাঁধা অবস্থায় রয়েছেন। তীরে পৌঁছানোর পর রায়হানকে কান্নাকাটি করতে দেখা যায়। একই ভিডিওতে এক যুবককে লাঠি দিয়ে রায়হানকে মারতে দেখা গেছে।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মইনুল হাসান বলেন, রায়হানের বাবা মো. কাসেম হাওলাদার বাদী হয়ে গত ৫ ফেব্রুয়ারি ৬ জনকে আসামি করে মহিপুর থানায় একটি অপহরণ মামলা করেছিলেন। দুদিন পর একই ঘটনায় পুলিশ ৯ জনকে আসামি করে মামলা করে।

“এরপর ওইদিন ৯ নম্বর মো. ইউসুফ বেপারী এবং পরদিন [৮ ফেব্রুয়ারি] মামলার ৩ নম্বর আসামি ইলিয়াস খানকে (২৬) গ্রেপ্তার করা হয়।”

রায়হানের বাবা আবুল কাসেম মিয়ার করা মামলার নথি থেকে জানা যায়, তাদের বাড়ি মহিপুর গ্রামে। বৃহস্পতিবার দুপুরে তার ছেলে ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালক রায়হান বাড়ি থেকে এক লাখ টাকা নিয়ে শ্বশুর বাড়ি তালতলী রওয়ানা হন। সন্ধ্যায় তার স্ত্রী ফোন করে অবস্থান জানতে চাইলে মোবাইলের অপরপ্রান্ত থেকে ধস্তাধস্তির শব্দ শুনতে পান। এসময় সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ফোনটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও রায়হানের সন্ধান পায়নি পরিবার।

পরদিন [শুক্রবার] রায়হানকে নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

এসপি আরও জানান, নিখোঁজ হওয়া রায়হান এবং মামলার আসামিরা একটি ‘অপরাধ চক্রে’ জড়িত এবং তাদের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলে পুলিশ সুপার মইনুল হাসান জানান।  

তিনি জানান, প্রধান আসামি ইমাম সিকদারের বিরুদ্ধে মহিপুর থানায় সাতটি মামলা এবং রায়হানের বিরুদ্ধে মাদক, চুরিসহ পাঁচটি মামলা রয়েছে।

উদ্ধার হওয়া যুবক রায়হান ‘আত্মগোপনে’ ছিলেন বলে পুলিশ সুপার মইনুল হাসানের দাবি।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মাহফুজুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) শেখ বেলাল, মহিপুর থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামানসহ সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

উদ্ধার হওয়া রায়হানকে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আদালতে উপস্থাপন করা হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।