এ ঘটনায় করা পৃথক দুইটি মামলার বিচারকাজ একই আদালতে এক সাথে করার জন্য উচ্চ আদালতে বাদীপক্ষের আবেদন করেছে।
রোববার সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহিতুল হক হাই কোর্টের এই আদেনের উপর আদেশ না পাওয়া পর্যন্ত সাক্ষ্যগ্রহণ মুলতবি রাখছেন কথা বলে জানিয়েছেন আদালতের পিপি রাশিদা সাইদা খানম।
পিপি জানান, মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবীরা ধর্ষণ মামলা এবং ধর্ষিতার স্বামীর কাছে চাঁদা দাবি ও ছিনতাইয়ের অপর মামলাটি একইসাথে একীভূত করে বিচার করার জন্য উচ্চ আদালতে আবারো আবেদন জানান। এর প্রেক্ষিতে রোববার তিন দফা পেছানো হয় সাক্ষ্যগ্রহণ।
এদিকে, বাদীপক্ষের আইনজীবী শহীদুজ্জামান জানান, একই ঘটনায় পৃথক দু’টি মামলা দুই আদালতে বিচারকাজ পরিচালিত হলে সাক্ষীরা দুই আদালতেই সাক্ষী দিলে নানা অসঙ্গতি দেখা দেবে। এতে বিচার প্রক্রিয়াও ব্যাহত হবার আশঙ্কা রয়েছে। তাই দু’টি মামলাই একই আদালতে বিচার করার জন্য আদেশ চেয়ে হাই কোর্টে আবেদন জানানো হয়েছে।
তিনি বলেন, “রোববার হাই কোর্টে শুনানি শেষে আদালত দু’টি মামলার বিচারকাজ সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে করার আদেশ দিয়েছেন।”
গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৯টার দিকে টিলাগড় এলাকার এমসি কলেজে স্বামীর সাথে বেড়াতে আসা ওই গৃহবধূকে ক্যাম্পাস থেকে তুলে ছাত্রাবাসে নিয়ে ধর্ষণ করেন কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী।
এ ঘটনায় পরদিন সকালে নির্যাতিতা গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে শাহপরাণ থানায় ছাত্রলীগ কর্মী সাইফুর রহমানকে প্রধান আসামি করে ছয়জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ২-৩ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
গত বছরের তিন ডিসেম্বর মামলার প্রধান অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মী সাইফুরসহ আট জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ।
অভিযোগপত্রে আট আসামির মধ্যে ছয়জনকে ধর্ষণে সরাসরি জড়িত আর দুইজনকে তাদের সহযোগী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
সরাসরি জড়িত অভিযুক্তরা হলেন, প্রধান আসামি ছাত্রলীগ কর্মী সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান রনি,তারেকুল ইসলাম তারেক, অর্জুন লস্কর, আইনুদ্দিন ওরফে আইনুল ও মিসবাউল ইসলাম রাজন মিয়া।
আর সহযোগী হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়েছে রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান মাসুমকে।
এর আগে ডিএনএ টেস্টেও গ্রেপ্তার আসামিদের ডিএনএ নমুনার সাথে ঘটনাস্থলের ডিএনএ নমুনার মিল পাওয়া যায়।
মামলায় গ্রেপ্তার আট আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। বহুল আলোচিত এ মামলায় ৪৯ জনকে সাক্ষী রাখা হয়েছে।
গত ১৭ জানুয়ারি আট আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের মাধ্যমে মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়।