খুবি প্রশাসনকে ৩ শিক্ষকের পক্ষে আইনি নোটিশ

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষককে বরখাস্ত ও দুই শিক্ষককে অপসারণের আদেশ প্রত্যাহার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

খুলনা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Feb 2021, 02:59 PM
Updated : 1 Feb 2021, 02:59 PM

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া তিন শিক্ষকের পক্ষে রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপচার্য ও রেজিস্ট্রারসহ ১০ জনকে ডাকযোগে এই নোটিশ পাঠিয়েছেন বলে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার খান গোলাম কুদ্দুস জানিয়েছেন।

নোটিশ পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ওই তিন শিক্ষকের বরখাস্ত ও অপসারণ আদেশ প্রত্যাহার করতে বলা হয়েছে। অন্যথায় আদালতে প্রতিকার চেয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে ওই নোটিশে।

রেজিস্ট্রার বলেন, “আইনি নোটিশ আমাদের হাতে এসে পৌঁছেছে। এ ব্যাপারে আইনানুগ প্রক্রিয়া অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।”

তিন শিক্ষক হলেন- বাংলা বিভাগের বরখাস্ত হওয়া সহকারী অধ্যাপক আবুল ফজল, অপসারিত হওয়া ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের প্রভাষক হৈমন্তী শুক্লা কাবেরী এবং বাংলা বিভাগের প্রভাষক শাকিলা আলম।

ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, “তিন শিক্ষককে সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত আক্রোশে, বিনা কারণে কোনো প্রমাণ ছাড়াই গুরুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।”

এদিকে তিন শিক্ষকের শাস্তি প্রত্যাহার দাবিতে রোববার ক্যাম্পাসে অবস্থান কমসূচি পালন করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা।

গত বছর জানুয়ারিতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বেতন-ফি কমানো, আবাসন সংকট সমাধানসহ পাঁচ দফা দাবিতে ক্যাম্পাসে আন্দোলন করেন। তাতে সমর্থন দেওয়ার অভিযোগ তুলে সম্প্রতি এক শিক্ষককে বরখাস্ত এবং দুই শিক্ষককে অপসারণ করা হয়।

সরকারি চাকরি বিধি অনুযায়ী, বরখাস্ত হলে তারা অন্য কোনো সরকারি চাকরি করতে পারবেন না। অপসারিত হলে করতে পারেন।

এছাড়া এ মাসেই অসদাচরণের অভিযোগে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই ছাত্রকে দুই বছরের জন্য আর একজনকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়। অন্যদিকে একজনের সার্টিফিকেট এক বছরের জন্য স্থগিত এবং অন্য একজনকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামানকে ২০১০ সালে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য নিয়োগ দেয় সরকার। ২০১২ সালে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান তিনি। এরপর দুই মেয়াদে ১০ বছর দুই মাস উপাচার্যের দায়িত্ব পালন শেষে গত ২৮ জানুয়ারি বিকালে ক্যাম্পাস ছাড়েন তিনি।

মেয়াদের শেষ দিকে এসে গত বছর বিশ্ববিদ্যালয়ে বেতন-ফি কমানো এবং আবাসন সংকট নিরসনসহ কয়েকটি দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের জের ধরে দুই ছাত্রকে বরখাস্ত এবং তিন শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করা হয়।

বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে ওই দুই ছাত্র নয় দিন অনশন চালিয়ে আসার পর ২৬ জানুয়ারি তাদের শরবত খাইয়ে অনশন ভাঙান উপাচার্য ফায়েক উজ্জামান। ২৮ জানুয়ারি তাদের বহিষ্কারাদেশ মওকুফের কথা জানিয়ে চিঠি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

তবে যে তিন শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে তাদের বিষয়ে কোনো কথা বলেননি তিনি। ছাত্রদের অনশন ভাঙানোর সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন, যে ইস্যুতে কথা বলছেন তার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে তিনি খুশি হবেন।