চাঁপাইনবাবগঞ্জে ঐতিহ্যের কালাই চাষ কমিয়ে সরিষায় নজর

চাঁপাইনবাগঞ্জে আমন ও বোরো চাষের মাঝে কয়েক দিনের মধ্যে সরিষার ব্যাপক ফলন ঘরে তোলার আশায় বুক বেঁধেছে কৃষকরা। আর ঐতিহ্যের মাসকালাই চাষ কমিয়ে সরিষায় ঝুঁকছে চাষি বলছেন কৃষি কর্মকর্তারা।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Jan 2021, 07:14 AM
Updated : 23 Jan 2021, 07:14 AM

আম ছাড়াও এ জেলার ঐতিহ্য কালাই রুটি।এ অঞ্চলে মাছ-ভাত-ডালের মতোই এ খাবার বহুল প্রচলিত। কালাই রুটির সাথে সাধারণত বেগুন ভর্তা, শুকনো মরিচ ভর্তা, বট, পেঁয়াজ ভর্তা, মাংস ভুনা ইত্যাদি দিয়ে পরিবেশন করা হয়।

সরিষা সহজ চাষ পদ্ধতি এবং অন্য রবি ফসলের চেয়ে খরচ কম হওয়ায় কৃষকরা ক্রমশ সরিষা চাষের দিকে ঝুঁকছেন বলে জানিয়েছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক এ কে এম মঞ্জুরে মওলা।

তিনি জানান, জেলায় এ বছর সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৫ হাজার ৫০০ হেক্টর জমি ছাড়িয়ে ১৬ হাজার ৭২০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে।

এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৫ হাজার ৯০ হেক্টর, শিবগঞ্জে ৩ হাজার ৭০০ হেক্টর, গোমস্তাপুরে ২ হাজার ১৬৫ হেক্টর. নাচোলে ৫ হাজার ১০ হেক্টর ও ভোলাহাট উপজেলায় ৭৫৫ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে বলে তিনি জানান।

সরিষা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১৯ হাজার ৪৯৪ মেট্রিক টন ধরা হয়েছে বলে জানান মঞ্জুরে মওলা।

সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সরিষা ক্ষেতের মাঠ হলুদ ফুলে ভরা। কোথাও কোথাও অগ্রিম চাষ করার কারণে ফলন তোলার সময় ঘনিয়ে আসছে। আর কিছুদিনের মধ্যেই কাটা শুরু হবে। 

সদর উপজেলার নবাবজাইগীর গ্রামের মজিবুর রহমান বলেন, তিনি এবার তিন বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন। খরচ করেছেন প্রায় ৭ হাজার টাকা। আশা করছেন ১৮ থেকে ১৯ মণ সরিষা উৎপাদন হবে। উৎপাদন খরচ কম তাই সরিষা চাষে লাভ হয় বেশি।

একই উপজেলার হোসেনডাঙ্গা গ্রামের আব্দুল ওহাব বলেন, তিনি এ বছর তিন বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন। তিনি আগেই লাগিয়েছিলেন, তাই আর কয়েকদিনের মধ্যেই পাকা শুরু হবে।

আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর সরিষার ভালো ফলন পাবেন বলে আশা করছেন তিনি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক এ কে এম মঞ্জুরে মওলা আরও জানান, এ বছর চরাঞ্চলে সরিষা চাষ গত বছরের চেয়ে বেড়েছে। চরাঞ্চলে এবার মাসকালাইয়ের চাষ হয়েছে কম। দেশি জাত ছাড়াও উচ্চ ফলনশীল বিভিন্ন জাতের বারি সরিষার আবাদ হয়েছে এবার।

আমন ও বোরো ধান রোপনের মাঝে সরিষা চাষ করা যায় এবং সর্বোচ্চ ৮৫ দিনের মধ্যে ফল পাকে বলে জানান এ কর্মকর্তা।

মঞ্জুরে মওলা আরও জানান, প্রতি বিঘা জমি সরিষা আবাদে খরচ হয় মাত্র ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা। খরচ কম হওয়ার কারণে কৃষকরা সরিষা চাষের প্রতি ক্রমশ আগ্রহী হয়ে উঠছেন। কৃষি বিভাগ উচ্চ ফলনশীল বারি সরিষা চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করছে।

আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে জেলায় এবার বাম্পার সরিষা উৎপাদন হবে বলে তিনি প্রত্যাশা করছেন।