গরম তেলে প্রতিবন্ধী স্বামীকে হত্যায় স্ত্রীর মৃত্যুদণ্ড

নোয়াখালীতে গরম তেল ঢেলে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী স্বামীকে হত্যার দায়ে স্ত্রীর মৃত্যুদণ্ড হয়েছে; শ্বশুর ও শাশুড়ির জাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে।

নোয়াখালী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Jan 2021, 03:37 PM
Updated : 19 Jan 2021, 03:37 PM

মঙ্গলবার নোয়াখালী জেলা ও দায়রা জজ সালেহ উদ্দিন আহমদ দুই বছর আগের এই মামলার রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন বিবি কুলসুম এবং যাবজ্জীবন কারদণ্ডে দন্ডিত হলেন কুলসুমের বাবা আবুল হোসেন ও মা লিলি বেগম।

রায়ে শ্বশুর ও শাশুড়িকে জাবজ্জীবন কারাদণ্ড ছাড়াও উভয়কে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড করা হয়েছে।

২০১৮ সালের ৩ মে বেগমগঞ্জ উপজেলার নরোত্তমপুর গ্রামে শহিদ উল্যাহর গায়ে তার স্ত্রী গরম তেল ঢেলে দিলে গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১২ মে শহিদ উল্যাহ মারা যান।   

আদালতের পিপি গুলজার আহমেদ জুয়েল বলেন, শহিদ উল্যার বাবা-মা ঢাকায় বসবাস করেন। ঢাকায় শহিদের বাবা মোহাম্মদ উল্যাহর ৫ তলা একটি ভবন আছে। মোহাম্মদ উল্যাহর এক ভাই ইতালী প্রবাসী। শহিদ তিন সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার নরোত্তমপুরে বসবাস করতেন।

“দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শহিদ উল্যাহর স্ত্রী কুলসুম জমি এবং ঢাকার একটি ফ্ল্যাট তার নামে দেওয়ার জন্য স্বামীকে চাপ দিতে থাকেন এবং ইতালী থেকে পাঠানো এক লাখ টাকা দিতে শশুরকে চাপ দেন।”

পিপি গুলজার বলেন, শহিদ উল্যাহ এতে রাজি না হওয়ায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। এরপর বিবি কুলসুম তার বাবা-মার সঙ্গে পরামর্শ করে স্বামীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

মামলার বরাত দিয়ে পিপি গুলজার বলেন, ২০১৮ সালের ৩ মে নাস্তার কথা বলে কুলসুম শহিদ উল্যাহকে বাজার থেকে বাড়ি ডেকে আনেন। এরপর কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে স্বামীর গায়ে গরম তেল ঢেলে দিয়ে পালিয়ে যান কুলসুম।

তিনি জানান, আহত শহিদকে প্রথমে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১২ মে তিনি মারা যান।

এই ঘটনায় শহিদের ভগ্নিপতি সাহেব উল্যাহ্ বাদী হয়ে শহিদুল্যার স্ত্রী বিবি কুলসুম, শ্বশুর আবুল হোসেন ও শাশুড়ি লিলি বেগমকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা করেন।

রায় ঘোষণার সময় আবুল হোসেন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তবে মামলার প্রধান আসামি নিহতের স্ত্রী বিবি কুলসুম ও শাশুড়ি লিলি বেগম পলাতক ছিলেন।