তিস্তার বুকে জেগে ওঠা ধু-ধু বালুচরে এবার কুমড়ার বাম্পার ফলন হয়েছে বলে কৃষক ও কৃষি বিভাগ জানিয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, গঙ্গাচড়া উপজেলার চিলাখালচর, বিনবিনা, ইচলি, ধামুর, ঘোনটারী, মিয়াপাড়া, আলেকিশামত, গান্নারপাড়, কুড়িবিশ্বা, নোহালীসহ ১৯টি চরে এই বছর ১৯টি গ্রুপে হাইব্রিড ‘ব্যাংকক ওয়ান’ এবং ইন্ডিয়ান ‘কালো পাথরী’ জাতের কুমড়া চাষের জন্য বীজ, সার, সেচ ওষুধসহ প্রয়োজনীয় সহায়তা দিয়েছে কৃষি বিভাগ।
বলতে গেলে বিনা পুঁজিতে এমন ফলন পেয়ে তাদের চোখে মুখে খুশি ফুটে উঠেছে।
রংপুরের গঙ্গাচড়ার ঘোনটারী চরের চাষি খাদিজা বেগম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এবছর তিস্তার চরোত বিন্যা পুঁজিত তিনশ কুমড়্যা আবাদ করচি। প্রতিট্যা গাছত ৪/৫টা করি কুমড়্যা হইচে। একেকটা কুমড়্যা ৪ থাকি ৬ কেজি ওজন হইবে। কুমড়্যার আবাদ দেকি ভালোয় নাগোচে।”
আবেগ আপুত কণ্ঠে ভূমিহীন খাদিজা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “হামার এক সময় মেলা কিছু থাকলেও এ্যালা কিচ্ছু নাই। সোগে তিস্তা নদীর ভাঙগোনোত শ্যাষ হয়্যা গেইচে। এ্যালা জমি জমা হারেয়া একেবারে নিঃস্ব হচি। তারপরও কুমড়্যার এই ভালো ফলনোত হামার সামনের দিনগুল্যা ভালোই যাইবে।”
গংগাচড়া উপজেলা কৃষি অফিসার শরিফুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, কৃষি বিভাগ সাত একর জমিতে সাতটি প্লট করেছে। তিস্তার চরাঞ্চল কুমড়া চাষের জন্য খুবই উপযোগী। স্বল্প পুঁজিতে কুমড়া চাষে এ অঞ্চলের অনেক কৃষক লাভবান হচ্ছে। তাই তারা নিজেরাই কুমরা চাষে ঝুঁকেছে।
সিকিউরিং ওয়াটার ফর ফুড (এসডাব্লিউএফএফ)-এর ফিল্ড কো-অর্ডিনেটর ফরিদ আহমেদ বলেন, চরাঞ্চলের হতদরিদ্র ভূমিহীন ক্ষুদ্র প্রান্তিক চাষিরা বিনা পুঁজিতে কুমড়া চাষ করে যা ফলন পেয়েছে তারা যদি এগুলো দেরিতে বিক্রি করে তাহলে প্রত্যেক পরিবার ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা আয় করবে।
“কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর স্থানীয় কৃষকদের নিয়ে বিভিন্ন চরে মিষ্টি কুমড়া চাষের ব্যাপক কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করছে। আমরা আশা করি, গতবার আমরা মিষ্টি কুমড়ায় যে সম্ভাবনা দেখেছি সেটা বাস্তবে রূপদান দিতে চলেছি।”