চাঁদপুরে গাড়ির গ্যারেজে মাছ চাষে ভাগ্য বদল

চাঁদপুর শহরের স্বর্ণখোলা এলাকায় হানিফ গাজীর গাড়ি রাখার গ্যারেজ। গ্যারেজের অব্যবহৃত জায়গায় দুই বছর আগে মাছ চাষ শুরু করেন তিনি।

আল ইমরান শোভন চাঁদপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Jan 2021, 11:28 AM
Updated : 9 Jan 2021, 11:28 AM

বায়ো ফ্লক্স পদ্ধতিতে মাছ চাষেই ভাগ্য বদলে গিয়েছে এ গ্যারেজের মালিক মোহাম্মদ হানিফের।

সাত লাখ টাকা বিনিয়োগ করে বর্তমানে বছরে এক লাখ টাকা করে আয় করছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

স্ত্রী, দুই ছেলে আর এক মেয়ে নিয়ে হানিফের সংসার। শহরের স্বর্ণখোলার বাসিন্দা আ. রাজ্জাক গাজীর ছেলে তিনি।

হানিফ জানান, দুই বছর আগে তিনি ৩৬ শতাংশ জায়গাটি ভাড়া নেন। সেখানে গাড়ি রাখার গ্যারেজ করেন।

“এতে যেই টাকা আয় হতো তা দিয়ে আমার খুব একটা লাভ হতো না। তখন আমি লক্ষ্য করে দেখলাম, আমার গ্যারেজের পুরোটা ব্যবহার হচ্ছে না। তখন আমি মাছ চাষের জন্য গ্যারেজের অব্যবহৃত অংশটা বেছে নিলাম।”

তিনি জানান, গ্যারেজের অব্যবহৃত ১২ শতাংশ জমিতে নিজের মতো করে তৈরি করেন বায়ো ফ্লক্সের ছয়টি বেড। এজন্য মাটির উপর প্লাস্টিকের রেক্সিন বিছিয়ে বক্স আকারে ট্যাংক তৈরি করেন। সেখানে পাইপের সাহায্যে ডিপটিউবওয়েলের পানি সরবরাহের পাশাপাশি অক্সিজেন সরবরাহ করা হচ্ছে।

ইউটিউবে প্রথম এ পদ্ধতিতে মাছ চাষাবাদের সাথে পরিচিত হন হানিফ।

তিনি বলেন, বর্তমানে আমি গাড়ির গ্যারেজের পাশাপাশি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করছি। বিজ্ঞান সম্মত হওয়ায় অল্প জায়গাতেই অনেক বেশি মাছ চাষ করতে পারছি। এতে করে অল্প খরচে বেশি টাকা আয় করা সম্ভব হচ্ছে।

এ চাষ শুরু করতে প্রথমে তার এককালীন সাত লাখ টাকা বিনিয়োগ করতে হয়েছে। কই, শিং, পাঙ্গাস, মনোসেক্স তেলাপিয়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ হচ্ছে সেখানে।

তিনি বলেন, “বর্তমানে আমি বছরে প্রায় এক লাখ টাকা করে আয় করছি।”

ভবিষ্যতে কর্মপরিধি আরও বাড়ানোর স্বপ্ন রয়েছে তার।বায়ো ফ্লক্স পদ্ধতিতে চাষ করা মাছ খেতেও সুস্বাধু বলে জানান তিনি।

হানিফের মাছ চাষে উদ্বুদ্ধ হয়ে পরামর্শ নিতে অনেক বেকার যুবক তার খামার দেখতে আসেন।

শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকার যুবক মো. সুমন, স্বপন গাজী, মো. আকাশ হানিফের মাছের খামারে চুক্তিভিত্তিক কাজ করেন।

তারা জানান, অবসর সময়টা কাজে লাগিয়ে কিছু টাকা উপর্যন করছেন তারা। একই সাথে এ পদ্ধতিতে মাছ চাষটাও শিখছেন।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আসাদুল বাকী বলেন, একটি গ্যারেজের অব্যবহৃত অংশতে মাছ চাষের মাধ্যমে নিজে লাভবান হওয়ার পাশাপাশি মাছের চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখছেন হানিফ।

পরিত্যক্ত জমিতে এ ধরনের মৎস্য খামার গড়ে তোলায় জেলা মৎস্য বিভাগের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে বলে জানান তিনি।