কেসিসির বর্জ্য থেকে হবে বিদ্যুৎ, সার ও ডিজেল

খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নগরীর প্রতিদিনের শত শত টন বর্জ্য থেকে ডিজেল, কমপোস্ট সার ও বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রকল্প হাতে নিয়েছে।

খুলনা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Jan 2021, 11:41 AM
Updated : 5 Jan 2021, 11:41 AM

কেসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. আবদুল আজিজ জানান, ‘ইন্টিগ্রেটেড ল্যান্ডফিল্ড অ্যান্ড রিসোর্চ রিকভারি ফ্যাসিলিটি শলুয়া’ নামের এই প্রকল্পে অর্থায়ন করছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক-এডিবি।

প্রায় ৫৫ কোটি টাকার এ প্রকল্পের জন্য খুলনা জেলার দৌলতপুর-শাহপুর সড়কে শলুয়া বাজারের কাছে গত বছর ১৭ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

তিনি জানান, বর্জ্য থেকে উৎপাদিত হবে ডিজেল ও কমপোস্ট সার এবং বায়োগ্যাস প্লান্ট থেকে উৎপাদিত গ্যাস থেকে হবে বিদ্যুৎ।

এই প্রকল্পের নকশা প্রণয়ন, মাটি পরীক্ষাসহ সংশ্লিষ্ট কাজও শেষ হয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

আব্দুল আজিজ জানান, শলুয়া ল্যান্ডফিল্ডে আনা নগরীর সবটুকু বর্জ্যই উৎপাদন খাতে কাজে লাগানো হবে। এই বর্জ্যের পানি জমিতে মিশবে না বা নদীতে যাবে না। এখানে দুটি বায়োগ্যাস প্লান্ট, দুটি কমপোস্ট প্লান্ট এবং প্লাস্টিক থেকে ডিজেল উৎপাদনের পৃথক দুটি প্লান্ট থাকবে।

এ বছর মার্চে দরপত্র আহ্বান করার আশা প্রকাশ করে

আবদুল আজিজ বলেন, ১৫ লাখ মানুষের খুলনা নগরীতে প্রতিদিন প্রায় এক হাজার ২০০ টন বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য উৎপন্ন হয়। এর মধ্যে ৮০০ টন বর্জ্য রাজবাঁধ ডাম্পিং গ্রাউন্ডে ফেলে কেসিসি; বাকি ৪০০ টন বর্জ্য নগরীর ভেতরেই থেকে যায়।

তিনি বলেন, নগরীর ভেতর থেকে প্রতিদিন ৩৭৫ টন বর্জ্য সংগ্রহ করে শলুয়া ল্যান্ড ফিল্ডে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে হাত ও যন্ত্রের সাহায্যে পচনশীল ও প্লাস্টিক বর্জ্য আলাদা করা হবে। পচনশীল বর্জ্য দিয়ে কমপোস্ট প্লান্টের মাধ্যমে প্রতিদিন ১৫ টন জৈব সার; আর বায়োগ্যাস প্লান্ট থেকে আসা গ্যাস দিয়ে প্রতিদিন ৩০০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। এছাড়া প্লাস্টিক পণ্য রিসাইকেল করে প্রতিদিন প্রায় পাঁচ হাজার লিটার ডিজেল উৎপাদন করা হবে।

উৎপাদিত বিদ্যুৎ প্লান্টেই ব্যবহার করা হবে এবং কমপোস্ট সার ও ডিজেল বিক্রি করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দেওয়া হবে বলে আজিজ জানান।

তিনি আরও জানান, সার ও বিদ্যুৎ উৎপাদনের পর বাকি বর্জ্য তিনটি স্যানিটারি ল্যান্ডফিল্ডে রাখা হবে। ল্যান্ডফিল্ডের পানি পরিশোধনের জন্য পৃথক ট্রিটমেন্ট প্লান্ট থাকবে। পানি ট্রিটমেন্ট হয়ে পুকুরে যাবে। সেই পানি সার, বিদ্যুৎ ও ডিজেল উৎপাদনে ব্যবহার হবে।

আজিজ বলেন, সব কাজ হবে আধুনিক যন্ত্রের মাধ্যমে। যন্ত্র পরিচালনা, প্লান্ট ব্যবস্থাপনা ও প্রাথমিক স্তরের কাজের জন্য ৩০ জন শ্রমিক এবং আটজন সুপারভাইজার কাজ করবেন।

এ বিষয়ে কেসিসি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, বর্জ্যকে এক সময় বোঝা মনে হতো। কিন্তু এই বর্জ্যকেই শক্তিতে রূপান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। এ কাজে এডিবি সহযোগিতা করছে। এ বছরই আনুষ্ঠানিকভাবে এই কাজ শুরু হবে।