বরিশালে হেফাজতে যুবকের মৃত্যু, পুলিশের নির্যাতনের অভিযোগ

বরিশালে গোয়েন্দা পুলিশ ধরে নেওয়ার কয়েকদিন পর হাসপাতালে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে, পুলিশের নির্যাতনে অসুস্থ হয়ে যার মৃত্যু হয় বলে স্বজনদের দাবি।

বরিশাল প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Jan 2021, 02:10 PM
Updated : 3 Jan 2021, 02:10 PM

তবে ডিবি পুলিশ নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং কোতোয়ালী থানা পুলিশ এই বিষয়ে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে।

মৃত রেজাউল করিম রেজা (৩০) বরিশাল নগরীর ২৪ নম্বর ওয়ার্ড হামিদ খান সড়ক এলাকার ইউনুস মুন্সীর ছেলে।

ইউনুস মুন্সী বলেন, গত মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার পর হামিদ খান সড়কের মুখে মাদ্রাসার সামনে থেকে রেজাকে আটক করেন নগর গোয়েন্দা পুলিশের এসআই মহিউদ্দিন মাহীসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য। তারা রেজার কাছে দুইজন মাদক ব্যবসায়ীর নাম জানতে চান।

“কিন্তু রেজা কোনো মাদক বিক্রেতাকে চিনেন না বললে তার মোবাইল নিয়ে যায় এসআই মহিউদ্দিন। এক পর্যায়ে রেজার কাছ থেকে মাদকদ্রব্য উদ্ধার হয়েছে দাবি করে তাকে আটক করে নিয়ে যায় ডিবি পুলিশ। এসময় রেজা সম্পূর্ণ সুস্থ ছিল।”

ইউনুস মুন্সী আরও বলেন, শুক্রবার (১লা জানুয়ারি) রাত ৯টার দিকে তাকে ফোন করে রেজার অসুস্থতার বিষয়টি জানায় কারা পুলিশ। কিন্তু হাসপাতালে রেজার সঙ্গে কাউকে দেখা করতে দেওয়া হয়নি।

“রেজার শরীরে আঘাতের চিহৃ রয়েছে। এসআই মহিউদ্দিনের নির্যাতনে রেজার মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাই।”

এ ব্যাপারে নগর গোয়েন্দা পুলিশের এসআই মহিউদ্দিন মাহী বলেন, রেজা চিহিৃত মাদক ব্যবসায়ী। তার কাছ থেকে গাঁজা ও নেশা জাতীয় ইনজেকশন উদ্ধার হয়। রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাকে আটকের পর পৌনে ১২টায় কোতোয়ালি থানায় হস্তান্তর করা হয়।

“মাত্র সোয়া ঘণ্টা রেজা ডিবি পুলিশের হেফাজতে ছিল। এই সময় তাকে কোনো ধরনের নির্যাতন করা হয়নি।”

কোতোয়ালি থানার ওসি নূরুল ইসলাম বলেন, ২৯ ডিসেম্বর রাতে রেজাকে মাদকদ্রব্যসহ থানায় সোপর্দ করে ডিবি পুলিশ। পরদিন আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। সবকিছু নিয়ম অনুয়ারী হয়েছে।

“তবুও পুলিশের হেফাজতে নির্যাতনের কোনো ঘটনা ঘটলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল ‍সুপার প্রশান্ত কুমার বনিক বলেন, ৩০ ডিসেম্বর আসামি রেজা কারাগারে আসেন। কারাগারে আসার কাগজে তার অসুস্থতার বিষয়টি উল্লেখ ছিল। শুক্রবার রাতে তার দুই পায়ের ফাঁক থেকে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। রাত সাড়ে ৯টার দিকে রেজাকে শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার গভীর রাতে তার মৃত্যু হয়েছে।