ঠাকুরগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাংচুর, আটক ১

বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাংচুরে হইচইয়ের রেশ কাটার আগেই ঠাকুরগাঁওয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভাংচুর করেছেন মধ্য বয়সী এক ব্যক্তি। পরে পুলিশ তাকে আটক করেছে।

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Jan 2021, 02:19 PM
Updated : 1 Jan 2021, 02:19 PM

শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে পীরগঞ্জ পৌর শহরের পূর্ব চৌরাস্তায় লোকজনের উপস্থিতিতে এই ম্যুরাল ভাংচুর হয় বলে পীরগঞ্জ থানার ওসি প্রদীপ কুমার রায় জানান।

আটক নুর আলম (৫৫) পীরগঞ্জ পৌর শহরের রঘুনাথপুর গ্রামের ওহিদুলের ছেলে।

বঙ্গবন্ধুর এই ম্যুরাল ভাংচুরের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

ভিডিওতে দেখা যায়, নুর আলম দুই হাতে একটি ইট নিয়ে ম্যুরালটি ভাংচুর করছেন। আর পাশেই মানুষজন ভিড় করে তা দেখছে।

প্রত্যক্ষদর্শীর বরাতে ওসি প্রদীপ কুমার রায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পীরগঞ্জ পৌর শহরের পূর্ব চৌরাস্তায় নির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালটি। শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে ম্যুরালের ডান পাশে ইট দিয়ে আঘাত করে ভেঙে ফেলেন নুর আলম।

“খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল থেকে নুর আলমকে আটক করা হয়।”

গত ৭ ডিসেম্বর হাই কোর্টের একটি বেঞ্চ সারাদেশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সব ভাস্কর্য ও ম্যুরালের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকারকে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছিল।

সেই জায়গা থেকে আপনারা কী ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছিলেন প্রশ্নে ওসি প্রদীপ কুমার বলেন, যেখানে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালটি ভাঙা হয়েছে সেই ম্যুরালটি বাজারের মধ্যে জনসমক্ষে এবং জনবহুল এলাকার মাঝখানে। এই জায়গায় দিনের বেলা এই ঘটনা ঘটেছে।

“অফ টাইমগুলোতে আমরা সর্বোচ্চ নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেই। দিনের বেলায় প্রকাশ্যে জনগণের সম্মুখে এই ঘটনা; বাজারের মধ্যে সিসি ক্যামেরা রয়েছে; সেই ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসনকে বলা হযেছে ম্যুরালটি আলোকিত করার জন্য, তারা ব্যবস্থা নিচ্ছেন।”

ওসি প্রদীপ কুমার বলেন, “আটক নুর আলমের সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছে তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন। তার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”

এদিকে ঘটনাস্থল পরির্দশন করেছেন পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিম ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) তরিকুল ইসলাম।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দিনের বেলা প্রকাশ্যে এভাবে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাংচুর করা বিষয়টি আসলে দুঃখজনক। আটক বৃদ্ধের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

তিনি বলেন, “স্থানীয়দের ভাষ্যমতে আটক ব্যক্তি মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন। এদিক-ওদিক ঘুরে বেড়ায়। তবে সে কেন বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাংচুর করেছে তা জানতে চেষ্টা করা হচ্ছে। এর পেছনে অন্য কেউ জড়িত রয়েছে কিনা সেটিও আমরা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি।”

পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ইমদাদুল হক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাঙার পেছনে একটি রাজনৈতিক দলের একটা অংশ জড়িত থাকতে পারে বলে তিনি মনে করছেন।

এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে এর সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন ইমদাদুল হক।