শনিবার দুপুরে রাজশাহী মহানগর পুলিশ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, এ ছিনতাইয়ের পেছনে জড়িত থাকার অভিযোগে ভুক্তভোগীর সঙ্গী তাই আপন মেজো ভাইকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার জিতেন ধর (৪৮) নাটোর জেলার বাগাতিপাড়া উপজেলার জামনগরের দ্বীনেশ ধরের ছেলে। তিনি রাজশাহীর পুঠিয়া এলাকায় বসবাস করেন।
এ ছিনতাই মামলার বাদী তার ভাই দ্বিজেন ধর (৫০) ফেনীর সদর উপজেলার মাস্টারপাড়ায় বসবাস করেন।
গত সপ্তাহে ২১ ডিসেম্বর সকাল সোয়া ৮টার দিকে এসব সোনার বার বিক্রির জন্য গ্রেপ্তার জিতেনকে সঙ্গে নিয়ে দ্বিজেন যাওয়ার সময় রাজশাহীর ভদ্রা মোড় এলাকা থেকে দুইটি মোটরসাইকেলে করে আসা অজ্ঞাত চারজন ‘প্রশাসনের লোক পরিচয়ে’ এ ছিনতাই করে বলে পুলিশের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
বাদী দ্বিজেন ধর রাজশাহীর জুয়েলার্সে নিয়মিত স্বর্ণবার বিক্রি করে থাকেন জানিয়ে পুলিশ ছিনতাইয়ের নাটোকীয় বিবরণ তুলে ধরেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, দ্বিজেন ফেনী থেকে ১৭টি স্বর্ণবার কিনে ২১ ডিসেম্বর ভোরে পুঠিয়ায় তার মেজো ভাই জিতেনের কাছে আসেন। এ সময় এসব সোনা জিতেনের হেফাজতে রাখেন তিনি।
প্রতিটি দশ ভরি ওজনের এই ১৭টি বারের বাজার মূল্য এক কোটি ১২ লাখ ৭১ হাজার টাকা বলছে পুলিশ।
মেজো ভাই জিতেন দ্বিজেনের অজ্ঞাতে এসব সোনার বার সরিয়ে ফেলে সেই বাজারের ব্যাগের মধ্যে তিনটি সীসার রড কাগজে মুড়িয়ে রেখে দেন। এরপর দুইভাই পুঠিয়া থেকে ওই ব্যাগ নিয়ে রাজশাহীর সাহেব বাজারের স্বর্ণপট্টি এলাকার এক জুয়েলার্সে বারগুলো বিক্রির জন্য বাসে রওনা হন।
এরপর জোর করে বাদী দ্বীনেশকে সঙ্গে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে নগরের শিরোইল এলাকার এক নির্মাণাধীন ভবনের কাছে নিয়ে ভয় দেখিয়ে তার টাকাসহ দুইটি মোবাইল ফোনও কেড়ে নেয়। এরপর তারা সটকে পড়ে।
তবে পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসে, জিতেন তার প্রতিবেশী পুঠিয়ার শিবচৌকি উত্তরপাড়া এলাকার মুদি দোকানী মিজানুর রহমান মিজানের (৩৫) সঙ্গে এ স্বর্ণ ‘ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করেছিলেন’। ছিনতাইয়ে মিজানুরের ভাতিজা স্থানীয় শিবচৌকি উত্তরপাড়ার বাসিন্দা মৃদুল (৩৪) ‘জড়িত’।
এছাড়া মৃদুলের সহযোগী আরও তিনজন সহযোগী এ ছিনতাইয়ে অংশ নেন বলে পুলিশ জানায়।
ছিনতাইয়ের পরদিন রাজশাহীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় করা দ্বিজেনের মামলায় জিতেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মামলার অপর আসামি মিজানুর রহমান (৩৫), মৃদুল (৩৪) ও তাদের অজ্ঞাতনামা সহযোগীরা পলাতাক রয়েছেন।
পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তার, লুণ্ঠিত নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন সেট এবং ব্যবহৃত হ্যান্ডকাপ, মোটরসাইকেল উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
উদ্ধার না হওয়া অপর স্বর্ণবারটি জিতেন নাটোরের এক জুয়েলার্সে বিক্রি করার প্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়ে পুলিশ বলছে, দ্বিজেনদের চার ভাইদের মধ্যে জমি নিয়ে আগে থেকেই বিরোধ রয়েছে।