‘সারা বছর তাঁত বুনি, শীতে বেচি’

সারা বছর অন্যান্য কাজের ফাঁকে শীতবস্ত্র বানিয়ে রেখে শীতে বেচে বাড়তি আয় করেন বান্দরবানের লাইমি পাড়ার নারীরা।

উসিথোয়াই মারমা বান্দরবান প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Dec 2020, 05:25 PM
Updated : 23 Dec 2020, 05:25 PM

সদর উপজেলার লাইমি পাড়ার বাসিন্দা সিংনেম বম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সংসারের কাজের ফাঁকে সারা বছর তিনি তাঁতে মাফলার তৈরি করেন।

“অন্যান্য সময় চাহিদা কম থাকায় জমিয়ে রাখি। শীত আসলে পাইকারদের কাছে বিক্রি করি। মানভেদে প্রতিটা ১৩০ টাকা পর্যন্ত পাইকারি বিক্রি হয়।”

গড়ে প্রতিদিন তিনটা হারে মাফলার বানাতে পারেন বলে তিনি জানান।

লাইমি পাড়ার প্রায় সবাই শীত মৌসুমে ঘরে বসে তাঁতে বিভিন্ন আকারের কম্বল, মাফলার ও চাঁদর তৈরি করেন।

বান্দরবান শহর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে লাইমি পাড়া ও ফারুক পাড়া। এ দুই পাড়ায় রয়েছে বেশির ভাগ বম জনগোষ্ঠীর দুই শতাধিক পরিবারের বাস। ফারুক পাড়ার নারীরাও তাঁতে শীতবস্ত্র তৈরি করেন।

লাইমি পাড়ার জিংরুন বম বলেন, গড়ে দৈনিক একটি চাঁদর তৈরি করতে পারেন তিনি। পাইকাররা প্রতিটি ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকায় কিনে নেয়।

“এক কেজি সুতায় দুইটা চাঁদর বানানো যায়। এক কেজির সুতার দাম দেড়শ টাকা। সব মিলে মাস শেষে একটি সংসার চালানো যায়।”

তাঁতে বানানো এই সব শীতের কাপড় তৈরির পাশপাশি পাইকারি কিনে খুচরা বিক্রিও করছেন বম নারীরা। বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্র ছোট দোকান সাজিয়ে বিক্রি করেন। এছাড়া শহরের বিভিন্ন মার্কেটে ও দোকানেও বিক্রি করেন।
লাইমি পাড়ার কার্বারি হাওলিয়ান বম বলেন, তাদের পাড়ার ৮৬ পরিবারে প্রত্যেকের ঘরে কেউ না কেউ তাঁতে শীতের কাপড় তৈরি করেন।

“এখানে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও খুবই পরিশ্রমী। তারা সারা বছর বাগান ও ক্ষেত-খামারেও কাজ করেন।”

জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা আতিয়া চৌধুরী বলেন, মহিলা উদ্যোক্তাদের সহযোগিতার জন্য পাঁচ শতাংশ সুদে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ দেয় সরকার। এই ঋণ পঁচিশ হাজার পর্যন্ত করার প্রক্রিয়া চলছে। মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরে নিবন্ধিত সদস্যদের জন্য মেঘলা পর্যটনের পাশে একটি মার্কেট তৈরি করা হয়েছে। যেখানে নিবন্ধিত সদস্যরা তাদের উৎপাদিত যেকোনো পণ্য বিক্রি করতে পারেন।