কক্সবাজারে সিনহা হত্যা মামলার অভিযোগপত্র গৃহীত

অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা হত্যার ঘটনায় বোনের করা মামলায় অভিযোগপত্র আদালত গ্রহণ করেছে।

কক্সবাজার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Dec 2020, 07:56 AM
Updated : 21 Dec 2020, 07:56 AM

সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম তামান্না ফারাহ’র আদালত তদন্ত কর্মকর্তার দাখিল করা অভিযোগপত্র গ্রহণ করে এবং পলাতক টেকনাফ থানার সাবেক এএসআই সাগর দেবের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে বলে জানিয়েছে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম।

পিপি ফরিদুল বলেন, সিনহার বোন শারমিনের দায়ের করা মামলার শুনানির নির্ধারিত দিনে তদন্ত কর্মকর্তার দাখিল করা অভিযোগপত্র আদালত গ্রহণ করেছে। এতে আদালত অভিযোগপত্রভুক্ত ১৫ জন আসামির মধ্যে পলাতক থাকা টেকনাফ থানার সাবেক এএসআই সাগর দেবের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।

এছাড়া নিহত সিনহার সঙ্গে ‘ডকুমেন্টারি’ নির্মাণে যুক্ত ছিলেন স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শিপ্রা দেবনাথ ও সাহেদুল ইসলাম সিফাত। তাদের বিরুদ্ধে ঘটনার পর মামলা করেছিল পুলিশ।

পিপি ফরিদুল জানান, সিনহা হত্যার ঘটনায় টেকনাফ থানায় পুলিশের দায়ের দুইটি মামলার শুনানির নির্ধারিত দিনে আগেই দাখিল করা চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে সাইদুল ইসলাম সিফাতকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছে আদালত।

সরকারি এ আইন কর্মকর্তা আরও জানান, সিনহার অপর সহযোগী শিপ্রা দেবনাথের বিরুদ্ধে রামু থানায় দায়ের করা অপর মামলায় আগামী ২৪ জানুয়ারি আদালতের বিচারকাজের নির্ধারিত ধার্য দিন রয়েছে। মামলাটির ব্যাপারে আসামিকে নির্দোষ দাবি করে গত ১৩ ডিসেম্বর র‌্যাবের তদন্ত কর্মকর্তা বিমান চন্দ্র কর্মকার আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন।

গত ৩১ জুলাই টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।

এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় সিনহার সঙ্গী সাইদুল ইসলাম সিফাতের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক আইনে দুইটি এবং রামু থানায় শিপ্রা দেবনাথের বিরুদ্ধে মাদক আইনে একটি মামলা করে।

এরপর ৫ অগাস্ট সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ নয়জন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন।

এতে প্রধান আসামি করা হয় বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সাবেক ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলীকে। আদালত র‌্যাবকে মামলাটি তদন্ত ভার দেয়।

এর পরদিন ওসি প্রদীপ ও পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ পুলিশের সাত সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।

এ ঘটনায় জড়িত থাকার সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার অভিযোগে পুলিশের দায়ের মামলার তিন সাক্ষী এবং ঘটনার সময় শামলাপুর চেকপোস্টে দায়িত্বরত আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ানের (এপিবিএন) তিন সদস্যকেও আসামি দেখিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়।

পরবর্তীতে একই অভিযোগে গ্রেপ্তার করে আসামি দেখানো হয় টেকনাফ থানার সাবেক কনস্টেবল  রুবেল শর্মাকে।

১৩ ডিসেম্বর সিনহা হত্যার ঘটনাটি ‘পূর্ব-পরিকল্পিত’ দাবি করে ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র‌্যাবের এএসপি খাইরুল ইসলাম।

এতে টেকনাফ থানার সাবেক এএসআই সাগর দেবকে নতুন করে আসামি দেখানো হয়।

অভিযোগপত্র ১৫ জন আসামির মধ্যে ১৪ জন কারাগারে থাকলেও নতুন করে আসামি হওয়া এএসআই সাগর দেব পলাতক রয়েছেন।

তাছাড়া কারাগারে থাকা ১৪ জন আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা এএসপি খাইরুল ইসলাম।

এদের মধ্যে ওসি প্রদীপ ও কনস্টেবল রুবেল শর্মা ছাড়া অন্য ১২ জন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তি প্রদান করেছেন বলে জানানো হয়েছে।