ডিসেম্বরের প্রথম দিন থেকেই এই শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করছেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।
শ্রীমঙ্গল পৌরসভার পুরান বাজার সড়কে নিজের বাড়ির একটি কক্ষে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ, সহযোদ্ধা ও বিভিন্ন দেশের অসাম্প্রদায়িক ব্যক্তিদের ছবি দিয়ে তিনি গড়েছেন একটি চিত্র সংগ্রহশালা।
বিরাজ সেন তরুণ জানান, সেগুন কাঠ দিয়ে তিনি এই মিনার তৈরি করেছের; এটির উচ্চতা সাড়ে ১১ ইঞ্চি, দৈর্ঘ্য ১১ ইঞ্চি ও প্রস্থ ৮ ইঞ্চি। এছাড়া দুই পাশের মিনারের উচ্চতা ৬ ইঞ্চি করে এবং মধ্যের মিনারের উচ্চতা সাড়ে ১১ ইঞ্চি।
বেশ কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন দিবসে এই মিনারে ফুল দিয়ে আসছেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। এবছর করোনাভাইরাসের কারণে কয়েকটি দিবসে অনুষ্ঠানাদি হয়নি। বিজয়ের মাস ডিসেম্বরের এক তারিখ থেকে ফের এই ছোট্ট শহীদ মিনারে শুরু হয় শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদনের কার্যক্রম চলছে।
কেউ তার চিত্রশালা দেখতে গেলে তারাও সেখানে রাখা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
শ্রীমঙ্গল দারিকা পাল মহিলা কলেজের শিক্ষক রজত শুভ চক্রবর্তী বলেন, মুক্তিযোদ্ধা বিরাজ সেন তরুণ একজন তারুণ্যদীপ্ত মানুষ। তার সংগ্রহশালার মাধ্যমে উঠে এসেছে মুক্তিযুদ্ধের অনেক ইতিহাস, যা দেখে নতুন প্রজন্ম উদ্বুদ্ধ হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনায়।
শ্রীমঙ্গল চাতালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষিকা চৈতালী চক্রবর্তী বলেন, “তার চিত্রশালা দেখতে এসে ছোট শহীদ মিনারে শহীদদের স্মরণ করে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করেছি। এ সুযোগটি মুক্তিযোদ্ধা বিরাজ সেন তরুণের কারণেই হয়েছে।”
বিরাজ সেন তরুণের এই প্রতিষ্ঠানকে একটি সমৃদ্ধ চিত্রশালা বলেছেন শ্রীমঙ্গলের প্রচ্ছদ শিল্পী অধ্যাপক অবিনাশ আচার্য্য।
বীর মুক্তিযোদ্ধা বিরাজ সেন তরুণ ১৯৭৫ সালে সপরিবারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর দীর্ঘদিন আত্মগোপনে ছিলেন। পরে দীর্ঘদিন বিদেশে কাটিয়েছেন। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফেরেন।
বিরাজ সেন তরুণ মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল ভিক্টোরিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজে লেখাপড়া করেছেন। বর্তমানে আমেরিকার নাগরিক হলেও স্থায়ীভাবে শ্রীমঙ্গলে বাবার ভিটায় বসবাস করছেন।