জয়পুরহাটে ট্রেন-বাস সংঘর্ষে নিহত ১১

জয়পুরহাট সদরের পুরানাপৈল রেল গেইট এলাকায় বাস ও ট্রেনের সংঘর্ষে অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছেন।

জয়পুরহাট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Dec 2020, 04:02 AM
Updated : 19 Dec 2020, 12:45 PM

শনিবার সকালের এই দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও চারজন।

জয়পুরহাট ফায়ার স্টেশনের ইনচার্জ সিরাজুল ইসলাম ও জয়পুরহাট সদর থানার ওসি আলমগীর জাহান হতাহতের এই খবর জানান।

হতাহতরা সবাই বাসযাত্রী বলে জানা গেছে।

নিহতদের মধ্যে ছয়জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন- বাসচালক সদর উপজেলার হারাইল গ্রামের মামুনুর রশিদ, হিচমী গ্রামের মানিকের ছেলে রমজান, পাঁচবিবি উপজেলার আটুল গ্রামের সরোয়ার হোসেন, আরিফুর রহমান রাব্বি, আক্কেলপুর উপজেলার চক বিলা গ্রামের দুদু কাজীর ছেলে সাজু মিয়া এবং নওগাঁর রানী নগর উপজেলার বিজয়কান্দি গ্রামের বাবু।

আহত তিনজনের পরিচয় জানা গেছে। তারা হলেন- পাঁচবিবি উপজেলার ফারুখ হোসেন, একই উপজেলার সিরাজুল ইসলামের ছেলে জিয়া, টাঙ্গাইলের মাটিকাটা গ্রামের শুকুর আলীর জুলহাস।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জয়পুরহাট ছেড়ে আসা বাঁধন নামের একটি যাত্রীবাহী বাস হিলি স্থল বন্দরের দিকে যাচ্ছিল। সকাল ৭টার দিকে পুরানাপৈল রেল গেইট অতিক্রম করার সময় দিনাজপুরের পার্বতীপুর থেকে আসা রাজশাহীগামী উত্তরা এক্সপ্রেস ট্রেন সজোরে এটিকে ধাক্কা দেয়।

ট্রেনটি বাসটিকে রেললাইন ধরে ছেঁচড়িয়ে প্রায় আধা কিলোমিটার দক্ষিণ দিকে নিয়ে যায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।

ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম জানান, বাসে থাকা ১০ জন যাত্রী ঘটনাস্থলেই নিহত হন, আহত হন আরও ৫ জন।

খবর পেয়ে জয়পুরহাট ও পাঁচবিবি ফায়ার স্টেশনের সদস্যরা হতাহতদের উদ্ধার করে জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালে পাঠায়।

ওসি আলমগীর জানান, আহতদের অবস্থা গুরুতর থাকায় তাদের বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে একজনের মৃত্যু হয়েছে।

দুর্ঘটনার পর ওই পথে রেল চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। আট ঘণ্টা পর বিকাল ৩টায় ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয় বলে জানান রেলওয়ের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন।

শীতের সকালে ওই লেভেল ক্রসিংয়ে গেইটম্যান না থাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা আলমগীর।

দুর্ঘটনা কবলিত বাসের বেঁচে যাওয়া হেল্পার সোহেল হোসেন বলেন, “দুর্ঘটনার সময় ওই রেলগেইটে কোনো গেইটম্যান ছিল না।”

বাসটিতে ২০ থেকে ২২ জন যাত্রী ছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, “বাসটি দুর্ঘটনার মুখে পড়ছে আশঙ্কা থেকে আমিসহ কয়েক জন যাত্রী লাফিয়ে প্রাণে বেঁচে যাই।”

রেলগেইটটির অনুমোদন ছিল জানিয়ে রেলওয়ের বিভাগীয় প্রকৌশলী আব্দুর রহিম বলেন, এ রেল গেইটে দুইজন স্থায়ী এবং একজন চুক্তিভিত্তিক গেইট কিপার রয়েছেন। তারা আট ঘণ্টা করে পালা করে দায়িত্ব পালন করে থাকেন।

“ঘটনার সময় দায়িত্বে ছিলেন গেইট কিপার নয়ন হোসেন। দুর্ঘটনার পর থেকে নয়ন পলাতক থাকলেও তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”

দুর্ঘটনা তদন্তে রেলওয়ের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা নাসির উদ্দিনকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

এ কমিটির সদস্যরা হলেন- বিভাগীয় যন্ত্র প্রকৌশলী আশিকুর রহমান, বিভাগীয় প্রকৌশলী আব্দুর রহিম এবং বিভাগীয় মেডিকেল অফিসার শাকিল আহম্মেদ।

এ দুর্ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসনও তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।