নেত্রকোণায় পিসিআর ল্যাব হয়নি, চলছে চিঠি চালাচালি

জেলার মানুষ বার বার দাবি জানালেও নেত্রকোণায় করোনাভাইরাস পরীক্ষার পিসিআর ল্যাব স্থাপন করা হয়নি।

লাভলু পাল চৌধুরী নেত্রকোণা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Dec 2020, 04:22 PM
Updated : 16 Dec 2020, 04:35 PM

প্রশাসন থেকে এই বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ে চিঠি চালাচালির কথা জানানো হলেও তার কোনো কার্য্কর পদক্ষেপের আলামত পাওয়া যাচ্ছে না।

এই শীতে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় পর্যায়ে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ার শঙ্কায় নেত্রকোণাবাসীর মাঝে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা বেড়ে চলেছে।

স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, জেলায় করোনাভাইরাস শনাক্তের ল্যাব না থাকায় নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করতে পাঠানো হচ্ছে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে। এই ল্যাবে ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলার নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে রিপোর্ট হাতে পেতে সময় লাগছে ৫ থেকে ৭ দিন; কোনো কোনো ক্ষেত্রে সময় লাগছে ১০/১২ দিন। ফলে পরীক্ষা হচ্ছে কম।

জেলা শহরের মোক্তারপাড়ার বাসিন্দা সুস্থির সরকার বলেন, “সরকার জেলায় জেলায় পিসিআর ল্যাব স্থাপনের কথা বললেও নেত্রকোণায় এখনও ল্যাব স্থাপিত হয়নি। সামনে যে সময় আসছে তার জন্য আমরা আশঙ্কা করছি ভয়াবহ অবস্থা হবে। আমরা অবিলম্বে পিসিআর ল্যাব স্থাপনের দাবি করছি।”

প্রায় ২৫ লাখ মানুষের এই জেলায় করোনাভাইরাস পরীক্ষা নিয়ে শুরু থেকে হয়ে আসা ‘ভোগান্তির’ অবসান চান তিনি। 

কেন্দুয়া উপজেলা সদরের লিয়াকত আলী চৌধুরী বলেন, “নেত্রকোণায় যে অগণিত রোগী আছে সেটা আমরা জানতে পারছি না। এরকম একটা অসচেতনতার মধ্যে আমরা আছি। একটা ল্যাব করা গেলে ভালো একটা ফলাফল বের হবে; রোগীর সংখ্যাও বোঝা যাবে।”

জেলা শহরের মোক্তারপাড়ার বাসিন্দা ও নেত্রকোণা সাহিত্য সমাজের সভাপতি অধ্যাপক কামরুজ্জামান চৌধুরী বলেন, করোনাভাইরাস পজিটিভ অনেকেই শহরে ঘুরছে পরীক্ষা করার সুযোগটাও যেহেতু পাচ্ছে না। ময়মনসিংহ থেকে এটা পরীক্ষা করিয়ে আনতে হয়। এই কারণে মানুষের আগ্রহটাও অনেক কম।

“আমরা চাইব বেশি সংখ্যক মানুষ পরীক্ষার আওতায় আসবে। তখন রোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থাটাও আরও সুন্দরভাবে প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। আমি প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।”

সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আহসান কবীর রিয়াদ বলেন, পিসিআর ল্যাব স্থাপন হলে পরীক্ষা আরও বাড়বে। পরীক্ষা বাড়লে ভাইরাস বহনকারীদের শনাক্ত করা সম্ভব। তাহলে করোনার বিস্তার রোধ করা অনেকটা সম্ভব হবে।  

জেলা প্রশাসক কাজি মো. আব্দুর রহমান বলেন, “পিসিআর ল্যাব স্থাপনের জন্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আশা করছি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আমরা পিসিআর ল্যাব পাব।”

জেলাবাসীর পাশাপাশি স্বাস্থ্য বিভাগও বলছে, টেস্ট কম হওয়া ও রিপোর্ট পেতে বিলম্ব হওয়ার কারণে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীকে সঠিক সময়ে শনাক্ত করে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। জেলাবাসী দ্রুত পিসিআর ল্যাব স্থাপনের দাবি জানাচ্ছে।