পাবনা বিশ্ববিদ্যালয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলির ফুল ছেঁড়ায় শিক্ষকদের হাতাহাতি

বিজয় দিবসে শহীদদের শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করতে গিয়ে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়েছে।

পাবনা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Dec 2020, 08:28 AM
Updated : 16 Dec 2020, 09:03 AM

বুধবার বেলা ১১টার দিকে পাবিপ্রবি ক্যম্পাসে এ ঘটনার সময় শিক্ষকদের একটি গ্রুপ পুষ্পস্তবক ছিঁড়ে অনুষ্ঠান পণ্ড করে দেয়।

পাবিপ্রবির প্রক্টর ড. প্রীতম কুমার দাস বলেন, শিক্ষকদের মধ্যে ‘ভুল বোঝাবুঝির কারণে হাতাহাতি’ হয়েছে, এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

‘জরুরি কাজে’ উপাচার্য ঢাকায় থাকায় এ অনুষ্ঠানে তিনি উপস্থিত ছিলেন না জানিয়ে প্রক্টর বলেন, “ভিডিও ফুটেজ দেখে পুষ্পস্তবক ছেঁড়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।”

ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে পাবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি আওয়াল কবির জয় বলেন, সকালে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য স্বাধীনতা চত্বরে যান তিনি।

সেখানে শিক্ষক সমিতির ব্যানারে ফুল দিতে আসেন সমিতির সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. ফজলুল হক।

“এ সময় সাধারণ শিক্ষকরা পুষ্পস্তবক অর্পণে অংশ নিতে গেলে তিনি বাধা দেন। এতে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। ড. ফজলুল হক কাউকে ফুল দিতে না দিয়ে নিজেই পুষ্পস্তবক ছিঁড়ে ফেলে পদদলিত করে পিষে ফেলেন।”

আওয়াল কবির জয় বলেন, “শহীদদের প্রতি এমন অমর্যাদা সহ্য করতে না পেরে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের প্রগতিশীল শিক্ষকদের মধ্যে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়।”

পাবিপ্রবির জ্যেষ্ঠ শিক্ষক ড. আবদুল আলীম বলেন, “শিক্ষকদের মধ্যে গ্রুপিং দ্বন্দ্ব থাকতেই পারে। তাই বলে শহীদদের সম্মানে আনা পুষ্পার্ঘ্য ছিঁড়ে ফেলা এবং পদদলিত করা ন্যক্করজনক। স্বাধীনতার পক্ষের কোনো মানুষ এ ধরনের কাজ করতে পারেন বলে আমার মনে হয় না।”

ব্যবসায় অনুষদ বিভাগের শিক্ষক কামাল হোসেন জানান, এ শিক্ষক সমিতির মেয়াদ শেষ হওয়ায় গত ৬ ডিসেম্বর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। পরে নির্বাচন স্থগিত করা হয়। তবে আগের কমিটি কাজ চালাতে থাকে। এ নিয়ে শিক্ষকদের আপত্তি রয়েছে।

পুষ্পস্তবক ছেঁড়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ড. ফজলুল হক জামায়াত-বিএনপির এজেন্ডা বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে এ কাজ করেছেন। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার হওয়া উচিৎ।”

পাবিপ্রবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফরিদুল ইসলাম বাবু বলেন, “বিজয় দিবসের দিনে শিক্ষকদের এমন কাণ্ড লজ্জার। আজ নিজেকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরিচয় দিতেই লজ্জা হচ্ছে।”

ছাত্রলীগ সভাপতি মাহমুদ চৌধুরী আসিফ বলেন, স্বাধীনতা চত্বরে পুষ্পস্তবক ছিঁড়ে ও পদদলিত করে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকেই পদদলিত’ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে সংবাদ সংগ্রহে গণমাধ্যমকর্মীরা পাবিপ্রবি ক্যম্পাসে গেলে নিরাপত্তাকর্মীরা প্রধান ফটকেই তাদের আটকে দেন।

ড. ফজলুল হকের বক্তব্য জানতে তাকে কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।