রাজশাহীতে পায়ে ‘পেরেক ঢুকিয়ে’ নির্যাতন

রাজশাহীর তানোর উপজেলায় চোর সন্দেহে পায়ের ভেতর পেরেক ঢুকিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।

রাজশাহী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Dec 2020, 02:48 PM
Updated : 15 Dec 2020, 02:48 PM

চিকিৎসক পায়ের ভেতর থেকে পেরেক বের করেছেন। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেওয়া হলেও পুলিশ মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত মামলা নথিভুক্ত করেনি।

নির্যাতিতরা হলেন- উপজেলার মোহর গ্রামের ইসাহাক আলীর ছেলে সেলুনমালিক ফিরোজ কবির (২৪) ও একই গ্রামের আমজাদ আলীর ছেলে ট্রলিচালক জসিম উদ্দীন (২৮)।

তাদের মধ্যে ফিরোজের পায়ে হাতুড় দিয়ে পেরেক পুঁতে দেওয়ার পাশাপাশি জসিমকে রড় ও হাতুড়ি দিয়ে পেটানোর অভিযোগ করেছেন স্বজনরা। এছাড়া তাদের একটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করার অভিযোগ করা হয়েছে।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক সাইফুল ফেরদৌস বলেন, “দুইজনকে হাসপাতালে ভর্তির পর চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

“তাদের মধ্যে অস্ত্রোপচার করে ফিরোজের পা থেকে পেরেক বের করা হয়েছে তারা এখন আশঙ্কামুক্ত।”

এলাকাবাসী জানান, রোববার রাত ৯টার দিকে দুইজন মোটরসাইকেলে করে দেবীপুর গ্রামে আত্মীয়বাড়ি যান দাওয়াত খেতে। সেখান থেকে ফেরার পথে কয়েকজন চোর সন্দেহে ফিরোজ ও জসিমকে আটক করে দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলে। তারা তাদের মোটরসাইকেল ভাঙচুর করার পাশাপাশি রাতভর নির্যাতন করে বলে অভিযোগ।

ফিরোজের মামা কামাল হোসেন অভিযোগ করেন, কয়েক মাস আগে দেবীপুর বাজারে ফিরোজের সেলুন ছিল। সেলুনে চুল কাটা নিয়ে ফিরোজের সঙ্গে রহিম নামে এক ব্যক্তির দ্বন্দ্ব হয়। ফিরোজ সেখান থেকে সেলুন গুটিয়ে নিজ গ্রামে যান।

“ওই দ্বন্দ্বের জেরে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে।”

কামাল বলেন, “সোমবার বেলা ১১টার দিকে তালন্দ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কাশেম এসে ফিরোজের মায়ের জিম্মায় দিয়ে তাদের কোনো অভিযোগ নেই বলে মুছলেকা নিয়ে দুইজনকে ছেড়ে দেন।”

পরে পরিবারের সদস্যরা তাদের হাসপাতালে নিয়ে যান।

চেয়ারম্যান আবুল কাশেমের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।

তানোর থানার ওসি রাকিবুল হাসান বলেন, দুইজনকে নির্যাতনের অভিযোগ দিয়েছেন ফিরোজের বারা ইসাহাক আলী। তালন্দ ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মামুনুর রশিদ মামুন ও দেবীপুর গ্রামের বেলাল হোসেনের ছেলে আব্দুর রহিমসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। পুলিশ ঘটনা তদন্ত করে দেখছে। অভিযোগের সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দ্রুত তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইফতে খায়ের আলম।