মূল্য বিপর্যয়ের শঙ্কায় কৃষি বিভাগ প্রয়োজনের অতিরিক্ত আলু আবাদে নিরুৎসাহিত করলেও এই অঞ্চলের চাষিদের উৎসাহে কোনো ঘাটতি নেই।
হঠা আলুর দাম বেড়ে যাওয়ায় কৃষকরা যেন হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন আলু চাষে। বীজ আলুর দাম বেড়ে গেলেও তাদের উৎসাহের ঘাটতি নেই। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন জমিতে।
কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, গত মৌসুমে রংপুর জেলায় আলু চাষ হয়েছে ৫০ হাজার ৬৬৫ হেক্টর জমিতে। চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা নিধারণ করা হয়েছে ৫১ হাজার ১১০ হেক্টর। কিন্তু ইতিমধ্যে আবাদ প্রায় দেড়গুণে পৌঁছেছে।
কাউনিয়া উপজেলার তিস্তার চরের আলু চাষি রফিকুল ইসলাম (৪৫) বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের তো চরের রোপা আমন ধান হয় না; তাই চর জাগার সাথে সাথেই আমরা আলু চাষ করি একটু লাভের আশায়। তবে কোনো বার লাভ হয়, আর কোনো বার ‘লস’ হয়। কিন্ত কী করব, আমরা তো কৃষক মানুষ, কৃষি হচ্ছে আমাদের ভাত কাপড়।
“গতবার ভাল দাম পেয়েছি, তাই এবারও আলু চাষ করছি।”
গংগাচড়া উপজেলার মর্নেয়া ইউনিয়নের চৌদ্দমাথার শফি মিয়া (৫০) বলেন, “গত দুই বছর আলুর আবাদ করে আমার অনেক ক্ষতি হয়েছে, কিন্তু গতবার ভালো দাম পাওয়ায় সেই ক্ষতি পূরণ হয়েছে ভাই। এবারও তো আলু চাষ করছি- দেখা যাক কী হয়। ভাগ্যে যা আছে তা তো হবেই। আল্লাহর উপর ভরসা করে আলু আবাদ করছি।”
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সারোয়ারুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “চাহিদার অতিরিক্ত আলু উৎপাদন করার কোনো প্রয়োজন নেই। আমরা এবছর আলুর দাম পেয়েছি। এটা কতদিন স্থির থাকবে সেটা কিন্তু নিশ্চিত না। তবে আমি মনে করি সব দিক মাথায় রেখে আমাদের আবাদ করা দরকার।”
এদিকে, উৎপাদক ও ভোক্তার দামের ন্যায্যতা নিশ্চিতে সরকারি পদক্ষেপেরও দাবি করেছেন কৃষকরা।
রংপুর জেলা জাতীয় কৃষক সমিতির সভাপতি নজরুল ইসলাম হক্কানি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আবাদকারীর ঝুঁকি মোকাবিলায় কৃষকদের পাশে সরকারের প্রণোদনা দেওয়ার পাশাপাশি সার বীজের দাম কমানোও দরকার।
তাই সরকারকে কৃষকদের প্রণোদনা দেওয়া দরকার বলে মনে করেন এই কৃষক নেতা।