বেগম রোকেয়ার ভাস্কর্য ‘আলোকবর্তিকা’ উন্মোচিত রংপুরে

বাংলার নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার ভাস্কর্য ‘আলোকবর্তিকা’ উন্মোচিত হয়েছে রংপুর নগরীতে।

রংপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Dec 2020, 12:07 PM
Updated : 9 Dec 2020, 12:22 PM

মহীয়সী এই নারীর জন্ম ও মৃত্যুদিনে বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় নগরীর শালবন ইন্দ্রার মোড়ে নির্মিত ভাস্কর্যটি উন্মুক্ত করা হয়।

ভাস্কর অনীক রেজা এই মহীয়সী নারীর ভাস্কর্যটি নির্মাণ করেন।

ভাস্কর অনীক রেজা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, সিটি করপোরেশন থেকে তাকে ভাস্কর্যটি উন্মুক্ত করতে বলা হয়। এজন্য ছোটো পরিসরে তিনি ভাস্কর্য উন্মুক্ত করার প্রস্তুতি নেন।

এই সময় সরকারি বেগম রোকেয়া কলেজ ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক এবং রংপুরের কয়েকজন সাংস্কৃতিক কর্মী, কবি ও লেখক উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন রংপুর মহানগর সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগের জেলা সাংস্কৃতিক সম্পাদক আতিক উল আলম কল্লোল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, রংপুর নগরের শালবন ইন্দ্রার মোড়ে বিগত সিটি মেয়র সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টুর সময়ে বেগম রোকেয়ার ভাস্কর্য নির্মাণ কাজের উদ্বোধন হয়েছিল। এরপর ধীরগতিতে চলা নির্মাণ কাজ হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়।

তিনি জানান, মাটি থেকে শুধু উঁচু বেদি তৈরির পরে কয়েকটি ইটের পিলার ছাড়া তখন আর কিছুই ছিল না। অযত্ন অবহেলায় পড়ে থাকা বেদিটি ভরে ছিল ধুলোবালি আর বিভিন্ন ফেস্টুন পোস্টারে।

মুখ থুবড়ে পড়ে থাকা সেই বেদিটি দেখে হতাশ ছিলেন স্থানীয়রা। বিভিন্ন মহল থেকে তখন ওই ভাস্কর্য নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ করার দাবি জোরালো হয়ে ওঠে। অবশেষে বছর তিনেক বন্ধ থাকার পর আবার শুরু হয় নির্মাণ কাজ।

অনীক রেজা জানান, ভাস্কর্যটি ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। এটির উচ্চতা মাটি থেকে ২০ ফুট। এরমধ্যে শুধু রোকেয়ার প্রতিকৃতি লম্বায় প্রায় ১২ ফুট। আর বেদির চারদিক জুড়ে রয়েছে ৫০ বর্গফুট জায়গা।

ভাস্কর্যটিতে রোকেয়ার জন্ম-মৃত্যুর সন উল্লেখসহ তার লেখা কিছু বই ও বাণীর উল্লেখ রয়েছে।

১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন বেগম রোকেয়া। ১৯৩২ সালের একই তারিখে কলকাতার সোদপুরে তার মৃত্যু হয়।

রাষ্ট্র, সমাজ ও পরিবার ব্যবস্থায় নারীর সমান অধিকারের জন্য আমৃত্যু লড়াই করেছেন মহিয়সী এই নারী।

মতিচূর, সুলতানার স্বপ্ন, পদ্মরাগ, অবরোধবাসিনী ইত্যাদি কালজয়ী গ্রন্থে ধর্মীয় গোঁড়ামি, সমাজের কুসংস্কার ও নারীর বন্দিদশার স্বরূপ উন্মোচন করেছেন তিনি।

বাল্যবিবাহ, যৌতুক, পণ প্রথা, ধর্মের অপব্যাখ্যাসহ নারীর প্রতি অন্যায় আচরণের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন রোকেয়া।