বাগেরহাটের শিশু সোহানাকে ‘পানিতে ফেলে হত্যা’, জবানবন্দি মায়ের

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে ১৭ দিনের শিশু সোহানা আক্তারকে হত্যার কথা স্বীকার করে তার মা শান্তা আক্তার পিংকি (১৯) আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।

বাগেরহাট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Nov 2020, 10:35 AM
Updated : 28 Nov 2020, 10:35 AM

বাগেরহাটের পুলিশ সুপার পঙ্কজ চন্দ্র রায় জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক মো. খোকন হোসেন শান্তার এ জবানবন্দি গ্রহণ করেন।

শিশুটির মা শান্তা ও বাবা সুজন খানকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

গত ১৫ নভেম্বর রাতে মোরেলগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের গাবতলা গ্রামে বাড়িতে ‘ঘুমিয়ে থাকা’ বাবা-মায়ের পাশ থেকে ১৭ দিনের নবজাতক সোহানা উধাও হয়ে যায়।

এ ঘটনায় সোমবার সকালে সোহানার দাদা আলী হোসেন খান বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে মোরেলগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে এক অপহরণের মামলা করেন।

চুরি যাওয়ার দুইদিন পর বুধবার সকালে জেলে সুজন খানের (৩০) বাড়ির পুকুর থেকে সোহানার ভাসমান মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

ওইদিন দুপুরে পুলিশ শিশুটির বাবা, চাচা রিপন এবং ফুফা হাসিবকে জিজ্ঞাসাবাদের করেঅ পরে সুজনকে প্রধান সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।

পুলিশ জানায়, শান্তা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার বনগঞ্জ গ্রামের ইউনুস মিঞার মেয়ে এবং সুজন মোরেলগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের গাবতলা গ্রামের আলী হোসেনের ছেলে। দুই বছর আগে সুজনের সঙ্গে শান্তার বিয়ে হয়।

বাগেরহাটের পুলিশ সুপার পঙ্কজ চন্দ্র রায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মোরেলগঞ্জ উপজেলার গাবতলা গ্রামের ১৭ দিনের শিশু সোহানা আক্তার শিশু হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে বাবা সুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নেওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে শিশুটির মা শান্তা ও সুজনকে মুখোমূখি করা হয় এবং এব পর্যায়ে শান্তা তার মেয়েকে পুকুরের পানিতে ফেলে হত্যার কথা স্বীকার করেন।”

তিনি বলেন, “শান্তা ও সুজনের আগেও একবার বিয়ে হয়েছিল এবং তাদের আগের ঘরে একটি করে কন্যা সন্তান রয়েছে। শান্তা তার আগের বিয়ে গোপন করেই সুজনকে বিয়ে করেন। শান্তা তার আগের স্বামীর ঘরে ফিরে যাওয়া অথবা এই ঘরে তার ছেলে সন্তান না হওয়া নিয়ে দাম্পত্য কলহের জেরে নবজাতক সন্তানকে পানিতে ফেলে হত্যা করেছেন বলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।”

এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত শিশুটির মায়ের দেওয়া জবানবন্দি ও বাবা সুজনের দেওয়া তথ্য যাচাই করে খুব দ্রুত আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে বলে এ পুলিশ কর্মকর্তা জানান।