শার্শায় শীতের সবজির ‘বাম্পার ফলন’, দামে খুশি চাষি

যশোরের শার্শা উপজেলায় শীতের সবজির বাম্পার ফলন হয়েছে; এর সঙ্গে ভালো দাম ও ক্রেতার চাহিদা বেশি থাকায় হাসি ফুটেছে  এ অঞ্চলের চাষিদের মুখে।

বেনাপোল প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Nov 2020, 05:46 AM
Updated : 26 Nov 2020, 05:46 AM

শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৌতম কুমার শীল জানান, চলতি বছরে বন্যা, ভারী বর্ষণ ও নিম্নচাপের প্রভাবে ধান, পাট ও শাক-সবজিসহ অন্যান্য ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

এসব ক্ষতি পূষিয়ে নিতেই শীতকালীন সবজির চাষ বেড়েছে। আর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর শীতের সবজির ফলনও ভালো হয়েছে।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে সৌতম বলেন, চলতি মৌসুমে ২০০০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। শার্শায় এবার পাঁচ হাজার চাষি ১ হাজার ৬৯৫ হেক্টর জমিতে শীতের সবজি আবাদ করেছেন; যার পরিমাণ গত বছর ছিল ১ হাজার ৫৫০ হেক্টর।

এদিকে শার্শার বিভিন্ন মাঠের সবজি ক্ষেত ও বাজার ঘুরে তরতাজা লাউ, কুমড়া, শিম, বেগুন, বরবটি, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ওলকপি, লালশাক, মুলা শাক, পালং শাক, সবুজ শাক,ডাটা শাক,টমেটো, গাজর, পটল, লতিকচু, মানকচু, ঢেড়স, বরবটি, চিচিংগা, সীম, উচ্ছে, করলা, বেগুন, মরিচ ও পেঁপেসহ নানা রকম তরতাজা সবজি দেখা গেছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা তরুণ কুমার বালা বলেন, এবার শার্শায় ২১০ হেক্টর জমিতে বেগুন, ১৯৫ হেক্টর জমিতে কুমড়া, ৩২৫ হেক্টর জমিতে পটল, ১০০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ধরনের কপি, ১৯০ হেক্টর জমিতে লাল শাক, পালং শাক, ডাটা শাক ও পুইশাক এবং ৩৫ হেক্টর জমিতে লাউয়ের চাষ হয়েছে।

এদিকে বাগআচড়া.নাভারণ ও বেনাপোল বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, কৃষক ও ব্যবসায়ীরা সবজি আহরণ ও বেচাকেনায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।

যদুনাথপুর গ্রামের গোলাম মোস্তফা ৫০ শতাংশ জমিতে কপি চাষ করেছেন। সার, বীজ ও অন্যান্য মিলিয়ে তার প্রায় ১২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি জানান।

তবে এ মৌসুমে প্রায় লাখ টাকার কপি বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা মোস্তাফার।

উলাশীর পানবুড়িয়া গ্রামের কৃষানি রুমা খাতুন বলেন, এ বছর ২৫ শতক জমিতে বেগুন চাষ করেছেন। পোকায় বেগুন নষ্ট করে দেয় বলে প্রতিনিয়ত বেগুনে কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়। তবে এবার কীটনাশক কম ব্যবহার করে প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে সুফল পেয়েছেন।

তিনি বলেন, “এ পর্যন্ত আমার খরচ হয়েছে ২২ হাজার টাকা; খরচ বাদে এরই মধ্যে ১৫ হাজার টাকা লাভ হয়েছে। আর বাজারে ব্যাপক চাহিদা থাকায় দামও ভাল পেয়ে আমি খুশি।”

কায়বা রাড়িপুকুর গ্রামের জোহরা খাতুন অন্যান্য সবজির পাশাপাশি ২৫ শতাংশ জমিতে শুধু লাউ চাষ করেছেন। এতে তার খরচ হয়েছে প্রায় ২০ হাজার টাকা।

এরই মধ্যে তিনি প্রায় ৫০ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, “সারা বছর সবজি চাষ করলেও শীতের সবজির গুরুত্ব অন্যরকম। এ সময় অনেক রকম সবজির চাষ করা যায়। বাজারে আগাম সবজি সরবরাহ করতে পারলে ভাল লাভও হয়।”

নাভারন বাজারের আড়ৎদার মনির হোসেন টিক্কা বলেন, “শীতের সবজিতে বাজার সয়লাব হয়ে গেছে। কিছুদিন আগেও দাম ক্রেতার নাগালের বাইরে ছিল। সরবরাহ বাড়ায় দাম কমেছে; এতে ক্রেতারা খুশি।

ওই এলাকা থেকে দৈনিক অন্তত ২০ ট্রাক সবজি রাজধানিতে যাচ্ছে বলে তিনি জানান।