কক্সবাজারে বিজিবির মানহানি মামলায় সেই নারীর বিরুদ্ধে সমন

কক্সবাজারে বিজিবির সদস্যরা দলবেঁধে ধর্ষণ করেছে দাবি করা সেই নারীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলায় সমন জারি করেছে আদালত।

কক্সাবাজার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Nov 2020, 09:03 AM
Updated : 22 Nov 2020, 09:03 AM

রোববার বেলা সাড়ে ১২টায় টেকনাফের ভারপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. হেলাল উদ্দিনের আদালত এ আদেশ দেয় বলে জানান বাদীপক্ষের আইনজীবী সাজ্জাদুল করিম।

এর আগে বিজিবির সুবেদার মোহাম্মদ আলী মোল্লার করা ১০০ কোটি টাকার মানহানি মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয় পুলিশ।

আসামি ফারজানা আকতার টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের ব্লাস্ট নামের এনজিও’র কর্মী।

গত ৮ অক্টোবর তাকে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের বিজিবির দমদমিয়া চেকপোস্টে তল্লাশির সময় তাকে দলবেঁধে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ তোলেন ফারজানা।

তার এ দাবির প্রেক্ষিতে ব্যাপক সমালোচনার মধ্যে গত ১০ নভেম্বর কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম তামান্না ফারাহের আদালতে বিজিবির টেকনাফের দমদমিয়া চেকপোস্টের দায়িত্বপ্রাপ্ত জেসিও নায়েব সুবেদার মোহাম্মদ আলী মোল্লা বাদী হয়ে ১০০ কোটি টাকার এ মানহানি মামলা করেন।

ওইদিন আদালত পুলিশকে ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার ২২ নভেম্বর দিনধার্য্য করে দেয়।

বাদীপক্ষের আইনজীবী সাজ্জাদুল করিম জানিয়েছেন, ব্লাস্টের ওই নারী কর্মীকে দমদমিয়া চেকপোস্টে বিজিবির পুরুষ সদস্যরা দলবেঁধে কথিত ধর্ষণের ঘটনার ব্যাপারে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে পুলিশ।

পুলিশের এ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মেডিকেল পরীক্ষায় ওই নারীর ধর্ষণের শিকার হওয়ার কোনো আলামত পাওয়া যায়নি।

“পুলিশের জমা দেওয়া প্রতিবেদনের আলোকে ধর্ষণের সত্যতা না পাওয়ায় আদালত বিজিবি সদস্যর দায়ের করা মানহানি মামলার আসামির বিরুদ্ধে সমন জারি করে আদেশ দিয়েছে।”

মামলার বিবরণ দিতে গিয়ে সাজ্জাদুল করিম বলেন, গত ৮ অক্টোবর সকালে আসামি ফারজানা আকতার অটোরিকশায় করে হ্নীলা থেকে টেকনাফ যাচ্ছিলেন।

কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের বিজিবির দমদমিয়া চেকপোস্টে গাড়িটি থামায় বিজিবি সদস্যরা। গাড়িতে থাকা পাঁচজন যাত্রীর মধ্যে অপর চারজনকে নিয়মমাফিক তল্লাশি করা হয়।

“কিন্তু ফারজানা নিজেকে ব্লাস্টের কর্মী পরিচয় দিয়ে দাম্ভিকতা দেখিয়ে তল্লাশি এড়ানোর চেষ্টা করতে থাকেন। এতে বিজিবির সদস্যদের সন্দেহ হয়।

“পরে বিজিবির নারী সদস্যরা এসে ওই নারীকে গাড়ি থেকে নামিয়ে তল্লাশি করেন। এতে ফারজানা বিজিবির সদস্যদের উপর ক্ষুব্ধ হন।”

এ ঘটনার পর ফারজানা টেকনাফ থানায় বিজিবির ওই চেকপোস্টের পুরুষ সদস্যদের বিরুদ্ধে দলবেঁধে ধর্ষণ করেছে অভিযোগে মামলা করতে যান।

তবে মামলা করতে পুলিশ তাকে মেডিকেল সনদ দরকার বলে জানায়। এরপর তিনি কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন বলে জানান আইনজীবী।

এ ঘটনা গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। তার প্রেক্ষিতে এই একশ কোটি টাকার মানহানির মামলা করা হয়।

পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন উদ্ধৃত করে মানহানি মামলার বাদীর আইনজীবী জানান, কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক শাহীন মো. আব্দুর রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বে গঠিত মেডিকেল বোর্ড তাকে পরীক্ষা করে ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি বলে সনদ প্রদান করেছে।